খান হাসিব: আমরা স্কুলে ইতিহাস বিষয়ক তথ্য জানতে খুবই পছন্দ করি, কারণ এসব তথ্যগুলি খুবই আকর্ষক এবং এগুলো আমাদের অতীত সম্পর্কে জ্ঞান সমৃদ্ধ করে।
তবে ইতিহাসের এমন কিছু চরিত্র আছে যাদেরকে আমরা সবাই চিনি, কিন্তু তাদের কিছু বিষয়ে স্কুল-কলেজে কখনো পড়া হয়নি। যেমন, আপনি কি জানেন ইতিহাসের দীর্ঘতম বছরটি ৪০০ দিনের বেশি ছিলো! এছাড়া কুখ্যাত হিটলার একটি গাড়ির ডিজাইন করেছিল যা আমরা বর্তমান সময়েও ব্যবহার করছি!
আজ ইতিহাসের এমন কিছু তথ্য দৈনিক এইদিনের পাঠকদের উদ্দেশ্যে ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করছি…
১. পিসার হেলানো টাওয়ারটি কখনই সোজা অবস্থায় ছিল না!
চার ডিগ্রি হেলানো এই ফ্রি-স্ট্যান্ডিং বেল টাওয়ারটি দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল, নির্মাণের পর থেকেই টাওয়ারটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে।
এই বাঁকানো অবস্থা আসলে ইচ্ছাকৃত বানানো না। ভবনের দ্বিতীয় তলা নির্মাণের সময় অস্থির ভূ-প্রকৃতির কারণে এই হেলে যাওয়ার সূত্রপাত ঘটে। পরে নির্মাণ কাজ এগিয়ে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্বমোট ৪ ডিগ্রি হেলে যায়, যা এই ভবনকে আইকনিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে!
২. ইউরোপের মহামন্দার সময় মানুষেরা খাবারের বস্তা/প্যাকেট দিয়ে নিজেদের পোশাক তৈরি করত!
এ সময় মানুষেরা ময়দার ব্যাগ, আলুর বস্তা দিয়ে পোশাক বানিয়ে নিজেদের লজ্জা নিবারণ করতো। এ কারণে খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এসব প্যাকেট রঙিনাকারে দেয়া শুরু করে, যাতে ওইসব মানুষেরা কিছুটা ফ্যাশানেবল পোশাক পরতে পারে!
৩. লর্ড বায়রন তাঁর কলেজের ছাত্রাবাসে একটি ভালুক রেখেছিলেন!
রোমান্টিক যুগের বিখ্যাত এই কবি কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে পড়াশোনা কালীন জানতে পারেন এখানে কুকুর পালার পর্যন্ত অনুমতি নেই। তখন তিনি এই নিয়ম ভাঙতে ক্যাম্পাসে ভালুক পালার সিদ্ধান্ত নেন।
এ সময় তিনি একটি ভালুক নিয়ে আসেন, তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ এর নিয়মের বেড়াজাল দেখিয়ে ভালুকটিকে ফেরত পাঠায়। অতঃপর লর্ড বাইরন আদালতে মামলা করেন ও জিতে যান।
এরপর থেকে তিনি সবাইকে দেখানোর উদ্দেশ্যে প্রায়ই ভালুকটি সাথে নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে বেড়াতেন!
৪. ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাচীন সংসদ ভবন আইসল্যান্ডে অবস্থিত!
‘আলথিং’ নামে পরিচিত এই সংসদ ভবন ৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত, ওই সময় থেকেই এটি আইসল্যান্ডের সংসদ ভবন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে!
৫. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত অবিস্ফোরিত বোমা বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে!
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় পশ্চিমা ফ্রন্টের প্রতি বর্গফুট অঞ্চলে আনুমানিক ২০০ পাউন্ড বিস্ফোরক নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তবে এর মধ্যে সব বোমা ওই সময় বিস্ফোরিত হয়নি। সেই থেকে এই পর্যন্ত প্রায় প্রতি বছর কৃষি কাজের সময় বোমা বিস্ফোরিত হয়ে চাষিরা হতাহত হয়। এই বিস্ফোরণকে স্থানীয় চাষিরা ‘লোহার ফসল’ বলে উল্লেখ করেন।
প্রতি বছর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের এই ‘লোহার ফসল’ উদ্ধার করতে অভিযান চালায় বিশেষ বাহিনী। এছাড়া যুদ্ধের সময় অস্ত্রের গুদাম হিসেবে ফসলি জমি ব্যবহার করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত বোমা ছাড়াও তারা বিপুল পরিমাণ গ্রেনেড, আর্টিলারি শেল এবং অন্যান্য বিস্ফোরক উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
আর ১৯১৯ সালের পর থেকে এসব বিস্ফোরণে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা বেশীরভাগ ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের বাসিন্দা!
কখনো স্কুলে পড়েননি এমন কিছু ঐতিহাসিক তথ্যর আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন