• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন
Notice
We are Updating Our Website

বেসরকারি স্কুল-কলেজে এইচএসসি পাস ছাড়া সভাপতি নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটিতে আমূল পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশোধন হচ্ছে গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা। বিদ্যমান ম্যানেজিং কমিটিতে সভাপতি হওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারিত ছিল না। নতুন বিধিমালায় সভাপতির জন্য সর্বনিম্ন এইচএসসি পাস নির্ধারণ করা হচ্ছে। আর সরকারি আমলাদের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে নিতে হবে অনাপত্তিপত্র।‌

ইতোমধ্যে এমন বিধান রেখে প্রস্তুত করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০২৩। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, শিগগিরই নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার পরও অর্থবিত্ত ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সভাপতির এমন ব্যক্তি আসেন যারা বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। অনেক সময় তারা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেন। তাই শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দিলে এ প্রভাব অন্তত কমবে। একই প্রভাব বিস্তার করেন সরকারি আমলা। তাদের লাগাম‌ টানতে অনাপত্তির প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তাই শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দিলে এ প্রভাব অন্তত কমবে। আর শিক্ষিত লোকজন নেতৃত্বে এলে শিক্ষার মানও বাড়বে।

কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিকের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে হলে স্নাতক বা ডিগ্রি পাস বাধ্যতামূলক করার পর সেখানে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

আগের প্রবিধানমালা-২০০৯-এ বলা হয়েছিল, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও কলেজের গভর্নিং বডির সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচনের পর নির্বাচিতরা সাত দিনের মধ্যে সভাপতি নির্বাচনের জন্য সভা আহ্বান করবেন।

সে অনুযায়ী, সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটির সভাপতি নির্বাচন করা হতো। এক্ষেত্রে কোনো সদস্য কিংবা স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি, সমাজসেবক, জনপ্রতিনিধি বা অবসরপ্রাপ্ত প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে একজনকে বাছাই করা হতো।

বিশেষ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হতো। মহানগরের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা প্রথম শ্রেণির কোনো কর্মকর্তাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হতো। এক ব্যক্তির দুইয়ের অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পালনের সুযোগ ছিল না।

এ সুযোগে একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও অর্থবিত্ত ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অনেকেই সভাপতির আসনে বসেন। এর ফলে বিভিন্ন বিষয়ে তারা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। অনেক সময় তারা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেন।

২০১৯ সালে নভেম্বরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হতে হলে স্নাতক পাস হতে হবে বলে নীতিমালা জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে করে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অনেকাংশে শৃঙ্খলা ফিরে আসে। এরপর মাধ্যমিকেও সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক নির্ধারণের দাবি উঠে বিভিন্ন মহল থেকে। অবশেষে সব শিক্ষা বোর্ড, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও শিক্ষাবিদদের পরামর্শে এ মানদণ্ড আপাতত এইচএসসি পাস নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, মাধ্যমিকের ম্যানেজিং কমিটি ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হতে হলে ন্যূনতম এইচএসসি পাস হতে হবে। একজন ব্যক্তি দুটি মাধ্যমিক ও দুটি কলেজ মিলিয়ে সর্বোচ্চ চারটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেন। এ ছাড়া সরকারি আমলারা সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনাপত্তি সনদ নিয়ে সভাপতি হতে পারবেন।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান‌ অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, নতুন প্রবিধানমালা নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। যতটুকু জানি স্কুল ও কলেজের সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন আরও কয়েকটি বিষয় সংযোজন করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরও খবর