জুমার দিন মানেই যেন মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এক বিশেষ দিন। কেননা মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার কাছেও এই জুমার দিনের রয়েছে বিশেষ মর্যাদা।
আল্লাহ রাত ও দিনকে সৃষ্টি করেছেন। সব দিনের মধ্যে জুমার বা শুক্রবারকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। কোরআন ও হাদিসে এই দিনের বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে।
জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদা: মহান আল্লাহর কাছে জুমার বিশেষ মর্যাদা আছে।
শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের জন্য এই দিনটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা আগের জাতিগুলোর কাছে জুমার মর্যাদা অজ্ঞাত রাখেন। তাই ইহুদিরা শনিবার নির্ধারণ করে। আর খ্রিস্টানরা রবিবার নির্ধারণ করে। অতঃপর আমরা আসি। আমাদের কাছে তিনি জুমার দিনের মর্যাদা প্রকাশ করেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৫৬)
জুমার দিনের পাঁচ বৈশিষ্ট্য: সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে জুমার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।
আবু লুবাবা বিন আবদুল মুনজির (রা.) থেকে বর্ণিত, হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। তা হলো: ১. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদমকে (আ.)সৃষ্টি করেছেন। ২. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদমকে (আ.) জমিনে অবতরণ করিয়েছেন। ৩. এই দিনে আদমকে (আ.) মৃত্যু দিয়েছেন, ৪. এই দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা কিছুই প্রার্থনা করবে তিনি তা দেবেন। যতোক্ষণ সে হারাম কিছু প্রার্থনা করবে না। ৫. এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৮৯৫)
পুরো বছর আমলের সওয়াব: জুমার দিন গোসল করা ও আগে আগে মসজিদে যাওয়া অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আউস বিন আউস সাকাফি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করলো, দ্রুততর সময়ে মসজিদে গেলো ও (ইমামের) কাছাকাছি বসে মনোযোগসহ (খুতবা) শুনলো, তার জন্য প্রতি কদমের বদলে এক বছরের রোজা ও নামাজের সওয়াব থাকবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৩৪৫)
গুনাহ মাফ হয়: সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করলো, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করলো, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করলো, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুইজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়লো, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকলো, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)
জুমার দিন দোয়া কবুলের সময়: জুমার দিন একটি সময় আছে, যখন মানুষ আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে ভালো কিছুর দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তা দেন। তোমরা সময়টি আছরের পর অনুসন্ধান কোরো।’ (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর : ১০৪৮)