খান হাসিব: দেখতে সুন্দর ও লোমশ হওয়ার কারণে পোষা প্রাণীদের মধ্যে বিশ্বজুড়ে অন্যতম জনপ্রিয় হচ্ছে বিড়াল। আপনি কি বিড়াল ও বিড়াল ছানাদের সম্পর্কে পরিপূর্ণ জানেন? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে আপনি ভাগ্যবান। আর উত্তর যদি না হয়, তাহলে আজকের লেখাটি আপনার জন্যই।
সুতরাং দেরি না করে আজ দৈনিক এইদিনের পাঠকদের জন্য বিড়াল ও বিড়ালের বাচ্চা সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে কিছু তথ্য সরবরাহ করছি, যা সব বিড়াল প্রেমীদের জানা উচিৎ…
৮১. আপনার বিড়াল শিকারের পর সেই প্রাণীকে আপনার কাছে নিয়ে আসার অর্থ হচ্ছে, সে আপনাকে ভালবাসে!
প্রকৃতপক্ষে এমন কাজের মানে হচ্ছে- বিড়ালটি আপনাকে তার শিকারের অংশীদার বলে মনে করে থাকে। আর এই কাজটি নারী বিড়ালেরা বেশি করে থাকে। সে তার সহজাত শিকার দক্ষতার ফলস্বরূপ উপহার হিসেবে শিকারকৃত প্রাণী আপনার কাছে নিয়ে আসে।
এরপর যখন মধ্যরাতে আপনার বিড়ালটি যদি ইঁদুর মেরে আপনার বালিশের উপর রেখে আপনাকে জাগিয়ে তুলে, তাহলে ইঁদুরটির উপর আপনার অধিকার আছে মনে করে খেয়ে দেখতে পারেন!
৮২. আপনার বিড়ালকে কখনই নিরামিষাশী বানানোর চেষ্টায় নিরামিষ জাতীয় খাবার খাওয়ানো উচিত নয়!
আপনি নিজের খাদ্যতালিকায় কি রাখবেন তা আপনার একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। তবে বিড়ালদের উন্নতির জন্য কেবল আমিষজাতীয় খাদ্যের প্রয়োজন। এর কারণ মানুষ স্বভাবতই সর্বভুক এবং যেকোনো খাবারে আমরা বেঁচে থাকতে পারি, কিন্তু বিড়ালরা হচ্ছে মাংসাশী।
এ কারণে বিড়ালকে মাংসভিত্তিক খাদ্য ব্যতীত অন্য কিছু খাওয়ানো হলে তার মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেবে যার ফল মারাত্মক হতে পারে।
আর এক্ষেত্রে এমন কোনও পশুচিকিত্সককে পাবেন না যে আপনার বিড়ালকে নিরামিষাশী করতে উৎসাহিত করবে। এর পরেও যদি বিড়ালকে মাংস পরিহার করানোর চিন্তা থাকে তাহলে বিড়ালের পরিবর্তে আপনার গিনিপিগ পালন করা উচিৎ!
৮৩. বিড়ালেরা মাইলেরও বেশি দূরত্বে চলে গেলেও বাসা চিনে ফিরে আসতে পারে, এই কাজ তারা কিভাবে করে তা প্রকৃতপক্ষে অজানা!
অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও একটি হারিয়ে যাওয়া বিড়ালের ফিরে আসার হৃদয়গ্রাহী এবং বিভ্রান্তিকর ক্লাসিক কাহিনী আপনি ব্যক্তিগতভাবে অথবা কোনও বন্ধুর কাছে শুনে থাকবেন? তবে তারা এটা কিভাবে করে এই ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নয়। তারপরেও এ বিষয়ে কিছু তত্ত্ব রয়েছে।
কেউ কেউ দাবি করেন যে, বিড়াল পৃথিবীর প্রাকৃতিক চৌম্বক ক্ষেত্র সনাক্ত করতে পারে এবং এটি ব্যবহার করে তারা বাসায় ফিরে আসে।
তবে এ বিষয়ে আরও বাস্তববাদী তত্ত্ব হচ্ছে, বিড়ালেরা তাদের আশ্চর্যজনক শক্তিশালী ইন্দ্রিয়গুলি ব্যবহার করে তাদের পদক্ষেপগুলি পুনরুদ্ধার করে তারা বাড়ি খুঁজে নেয়!
৮৪. যেসব গৃহপালিত বিড়াল মুক্ত অবস্থায় থাকে, তারা স্বভাবতই বাড়ি থেকে খুব দূরে ঘোরাফেরা করে না!
যদিও এর ব্যতিক্রমও ঘটতে পারে, তবে বেশিরভাগ গৃহপালিত মুক্ত বিড়ালেরা নিজ বাড়ি থেকে চার বা পাঁচটি বাড়ির বেশি ঘুরে বেড়ায় না। এ বিষয়ে নারী ও পুরুষ বিড়ালের ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
তবে পুরুষ বিড়ালের ক্ষেত্রে এই ঘোরাঘুরির পরিমাণ ১৫০০ ফুট (৪৫৭ মিটারের) বেশি হয়। আর নারীদের ক্ষেত্রে এই দূরত্ব ৭৫০ ফুট (২২৮ মিটার) হয়ে থাকে!
৮৫. ঘরে পালনের ক্ষেত্রে কালো বিড়ালগুলো সবচেয়ে বেশি অবহেলিত!
দুর্ভাগ্যবশত, নানাবিধ কুসংস্কারের কারণে বিশ্বজুড়ে কালো বিড়ালেরা দুঃসহ অবস্থায় রয়েছে। শত শত বছর ধরে কালো বিড়ালেরা জাদুবিদ্যা এবং দুর্ভাগ্যের সাথে যুক্ত।
তবে কারণ যাই হোক, কালোদের চেয়ে অন্যান্য বিড়ালেরা সহজে পরিবার খুঁজে পায়!