ডেস্ক রিপোর্ট: ছোটবেলায় রূপকথার গল্প শুনতে আমরা সবাই পছন্দ করতাম। অনেক গল্পে ঘুমন্ত রাজকন্যার কথাও ছিল। সেই যে দুষ্টু পরীর অভিশাপের জন্যে ঝুমপুরীর রাজকন্যা ঘুমিয়েছিল বছরের পর বছর। পদ্ম বনে হিরা বসানো সোনার খাটে ১০০ বছর ঘুমিয়েছিল সে।
মাথার কাছে সোনার কাঠি ও পায়ের কাছে থাকতো রূপার কাঠি। হঠাৎ এক রাজপুত্র এসে সেই কাঠি দিয়ে জাগিয়ে তুলেছিল ঘুমন্তপুরীর কন্যাকে। এত শুনলাম রূপকথা, কিন্তু এবার বাস্তবেও দেখা মিলিছে এমন এক স্লিপিং বিউটি বা ঘুমন্ত রাজকন্যার।
ব্রিটিশ তরুণী বেথের কাহিনী রূপকথার গল্পের মতোই যেন। লন্ডনের মানুষ জানে সত্যিকারের এই স্লিপিং বিউটির গল্প। ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে ইংল্যান্ডের স্টকপোর্ট শহরে একটা বাড়িতে একটি জন্মদিনের আয়োজনে ব্যস্ত সবাই।
বাড়ির মেয়ে বেথ গুডিয়ার ১৭তম জন্মদিন উপলক্ষে নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে তুলছে বেথের মা। তবে কেক কাটার আগেই ক্লান্ত লাগতে শুরু করে বেথের নিজেকে। একটু বিশ্রাম নেবার জন্য সে শরীরটাকে সোফায় এলিয়ে দিতেই আর ঘুম ভাঙলো না তার।
এভাবেই ৫ বছর নাকি সে ঘুমিয়েছে। বেথের পরিবার পাগলের মতো চিকিৎসা করাতে থাকে। শেষে জানা যায় এক বিরলতম রোগে আক্রান্ত ১৭ বছরের বেথ যার নাম ক্রেন লেভিন সিনড্রোম বা স্লিপিং বিউটি সিনড্রোম।
এই জটিল স্নায়ুর অসুখে স্নায়ুদুর্বলতা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে মাসের পর মাস ঘুমিয়ে পড়ে থাকে মানুষটি। রোগীর মধ্যে এতটাই অবসাদ আর ক্লান্তি কাজ করে যে খিদে বেড়ে যায়, আর মেজাজও চড়ে থাকে।
মেয়েটির অসুখের সঙ্গে এই রোগের মিল থাকলেও শুরুর দিকে মূলত ক্লেন লেভিন সিনড্রোম ছিল তার। বয়ঃসন্ধিকালের ছেলেমেয়েদের এই রোগ হতে পারে। রোগীর ঘুমের প্রকোপ এতটাই বেড়ে যায় যে দিনের অধিকাংশ সময়টাই ঘুমিয়ে থাকে।
অনেক সময় একটানা বেশ কয়েকদিনও কেটে যায় ঘুমিয়ে। প্রথম দফায় টানা প্রায় ছ’মাস গড়ে বাইশ ঘণ্টা ঘুমাতো বেথ। জন্মদিনের পর থেকে পাঁচ বছর ৮৫% সময়ই ঘুমিয়ে ছিল মেয়েটি। প্রায় এক দশক অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সুস্থ হয়নি সে।