• রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৯:২০ অপরাহ্ন
Notice
We are Updating Our Website

সামিয়া রহমানের দাবি তাকে বলির পাঠা বানানো হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : সোমবার, ১ মার্চ, ২০২১
সামিয়া রহমানের দাবি তাকে বলির পাঠা বানানো হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট: একাডেমিক গবেষণায় চুরির ঘটনায় শাস্তি হিসেবে পদাবনতি হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমান দাবি করেছেন, তাকে ষড়যন্ত্র করে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তাকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হয়েছে।

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সামিয়া রহমান এসব কথা বলেন। এসময় তার সাথে ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এবং আইনজীবী তুরিন আফরোজ।

সামিয়া রহমানের দাবি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাননি। এ বিষয়ে প্রকৃত সত্য উদ্‌ঘাটন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কঠোর নির্দেশ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যেও আছেন বলে জানান তিনি।

সামিয়া রহমান বলেন, যে গবেষণার লেখার জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেটা তিনি লেখেননি, জমাও দেননি। এ–সংক্রান্ত প্রমাণও তার কাছে আছে। এই ‘ষড়যন্ত্রের’ পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেউ কেউ এবং কিছু শিক্ষক জড়িত রয়েছেন বলে ইঙ্গিত করেন সামিয়া রহমান। তবে তাদের নাম না বলে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে তা বের করতে সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানান।

সামিয়া রহমান বলেন, এ ঘটনার জন্য জার্নালের রিভিউয়ার ও বোর্ডের শাস্তির সুপারিশ ছিল। তিনি বলেন, ‘তাদের শাস্তি হয় না, কারণ তারা প্রতিষ্ঠিত বলে বিশ্ববিদ্যালয় তা সুকৌশলে এড়িয়ে যায়, আর বলির পাঁঠা হই আমি। প্রতিহিংসা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাজনীতির নোংরামির চরম শিকার হলাম আমি।’ শিকাগো জার্নালের যে ব্যক্তির ই-মেইলের কথা বলা হয়েছে, সেটি ভুয়া বলে দাবি করেন সামিয়া রহমান।

গবেষণায় চুরির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদাবনতি দিয়েছে। আর শাস্তি পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান এখন শিক্ষা ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে আছেন।

জানা যায়, সামিয়া ও মারজানের শাস্তি নির্ধারণে গঠিত ট্রাইব্যুনাল দুজনের একটি করে ইনক্রিমেন্ট বাতিলের শাস্তি প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু সার্বিক দিক বিবেচনা করে সিন্ডিকেট সেই প্রস্তাব নাকচ করে দুজনকে পদাবনতি দিয়েছে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া ও মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘আ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: আ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শীর্ষক আট পৃষ্ঠার একটি নিবন্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের নিজস্ব জার্নাল সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউয়ে প্রকাশিত হয়। তখন অভিযোগ ওঠে, ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ১৯৮২ সালে প্রকাশিত ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ শীর্ষক নিবন্ধ থেকে পাঁচ পৃষ্ঠার মতো হুবহু নকল করেছেন তারা। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানায় ওই গ্রন্থের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস। নিবন্ধটিতে ফুকো ছাড়াও ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন চিন্তক এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ গ্রন্থের পাতার পর পাতা হুবহু কপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগটি তদন্তে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) নাসরীন আহমাদকে প্রধান করে একটি কমিটি করে সিন্ডিকেট। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৯ সালে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, সামিয়া-মারজানের চুরির অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তবে কমিটি কোনো শাস্তির সুপারিশ করেনি।


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরও খবর