• রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ১০:০২ অপরাহ্ন
Notice
We are Updating Our Website

আবারও ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার আশঙ্কা, নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : রবিবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের আকস্মিক তাণ্ডবের রেশ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি মার্কিনরা। নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিরাজ করছে অনিশ্চয়তা। দেশটির নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠান সামনে রেখে আবারও ট্রাম্প সমর্থকদের হামলা হতে পারে। এরই মধ্যে তাদের ভেতর আশঙ্কাজনকভাবে হিংসাত্মক বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে দেশজুড়ে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এরইমধ্যে বাইডেনের জয় ঠেকাতে ট্রাম্প সমর্থকদের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর তারা এবার সর্বশেষ হামলা করতে পারে এমন আশঙ্কার খবর প্রচার করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের এক সতর্কতার বরাত দিয়ে ওই খবরে বলা হয়, বাইডেনের ২০ জানুয়ারির শপথ অনুষ্ঠানের আগে ১৭ জানুয়ারি ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকরা ক্যাপিটল হিল প্রাঙ্গণে আবারো হামলা চালাতে পারে। বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণ ঠেকাতে এ হামলাকে তারা শেষ সুযোগ হিসেবে বেছে নিতে পারে।

অ্যান্টি ডিফেমেশন লিগ নামে একটি সংস্থা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ঘৃণাসূচক ও হিংসাত্মক বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার প্রতিরোধে কাজ করছে। সংস্থার সিইও জোনাথন গ্রিনব্লাট বলেন, হোয়াইট সুপ্রিমেসিস্ট (শ্বেতাঙ্গদের শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার) ও উগ্র ডানপন্থীদের মধ্যে এখন এ ধরনের আলোচনাগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমরা বর্তমানে পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আগে আরো খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা করছি।

বুধবার ক্যাপিটল হিলে হামলার বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিংসাত্মক ও উসকানিমূলক বার্তা ছড়িয়ে পড়েছিল। এর মধ্যে কোনো কোনোটিতে সরাসরি গৃহযুদ্ধেরও ডাক ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এমনই এক বার্তা ছিল ‘হয় ট্রাম্প, নয় যুদ্ধ। আজকেই।’ আরেকটি বার্তায় বলা হয়, ‘যদি কেউ গুলি করতে না জেনে থাকে, তাহলে তা শেখার শ্রেষ্ঠ সময় এখনই।’ আরেকটি বার্তার বক্তব্য ছিল আরো অনেক বেশি সরাসরি ও উসকানিমূলক—‘আমরা সরকারি ভবনে হামলা চালাব। পুলিশ, নিরাপত্তা রক্ষী ও ফেডারেল কর্মীদের খুন করব। এবং আবার ভোট গণনার দাবি জানাব।’

৬ জানুয়ারি ইতিহাসের কলঙ্কজনক হামলার পর ট্রাম্প সমর্থকদের পক্ষ থেকে টুইটারে দ্বিতীয় হামলার জন্য উদ্বুদ্ধ করে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের জন্ম ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই এবং মৃত্যু ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি, তাই দেশ রক্ষায় এটা শেষ সুযোগ। এমন ভয়াবহ বার্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের আগে উগ্রপন্থিরা সহিংসতার পথ বেছে নিতে পারে, যা নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এখনই কাজ করা প্রয়োজন।

প্রথমবারের মতো ট্রাম্প পরাজয় মেনে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা স্বীকার করলেও ২০ জানুয়ারির বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে তার না থাকার ঘোষণাও সন্দেহজনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইতোমধ্যেই স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি মার্কিন শীর্ষ জেনারেল জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান মার্ক মিলির সঙ্গে আলোচনা করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন।

এদিকে দ্বিতীয় দফায় ট্রাম্পের অভিশংসনে পদক্ষেপ নিয়েছে ডেমোক্র্যাট শিবির।

এর আগে ক্যাপিটল হিলে সর্বশেষ হামলা হয়েছিল ১৮১৪ সালে। ওই সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। বুধবারের ওই হামলার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার আবেদন জানালেও, সমালোচকরা বলছেন, তার সে আবেদন জোরালো ছিল না। উল্টো সে আবেদনের মধ্যেও তিনি নির্বাচনে কারচুপির ‘মিথ্যে’ অভিযোগ তুলেছেন জোরালোভাবে। ঘটনার দিনই এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও সিনেটে রিপাবলিকানদের নেতা মিচ ম্যাককোনেল।

এছাড়া বিশ্বনেতারাও ঘটনার দিনই এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। তবে হোয়াইট সুপ্রিমেসিস্ট ও উগ্র ডানপন্থীদের মধ্যে এর কোনো প্রভাবই পড়েনি। ট্রাম্পপন্থী অনলাইন ফোরাম দ্য ডোনাল্ডডটউইনে এক মন্তব্যকারী ঘটনার পরদিন লেখেন, ‘আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নেবেন ট্রাম্প। আমরা কমিউনিস্টদের জিততে দিতে পারি না। যদি এজন্য আমাদের ডিসি (ওয়াশিংটন) জ্বালিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হয়, তবুও। আগামীতে আমরা ডিসি ও আমাদের দেশের দখল আমাদের হাতে তুলে নেবই নেব।’


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরও খবর