রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে এবারের মতো এত বিপুল সংখ্যক নারী প্রার্থীর অংশগ্রহণ আগে দেখা যায়নি। বিভিন্ন পদে মোট ৩৪ জন নারী শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন ৩২ জন। তারা স্বতন্ত্র ছাড়াও ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, রাকসুর দীর্ঘ ইতিহাসে নারী অংশগ্রহণের এই উত্থান বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে তাদের নেতৃত্ব ও সক্রিয় ভূমিকাকে আরও সুদৃঢ় করবে।
ভিপি ও জিএস পদে নারী প্রার্থী
ভিপি পদে একমাত্র নারী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাসিন খান। পাশাপাশি তিনি সিনেট সদস্য পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জিএস পদে রয়েছেন পরমা পারমিতা (২০১৮-১৯), নুসরাত জাহান নুপুর (২০১৯-২০), আছিয়া খাতুন (২০১৯-২০) ও আফরিন জাহান (২০১৮-১৯)।
অন্যান্য সম্পাদকীয় পদে নারীরা
এজিএস পদে লড়ছেন জান্নাত আরা নওশিন (২০২১-২২) ও ছাত্রদল সমর্থিত জাহিন বিশ্বাস এষা (২০২০-২১)। ক্রীড়া সম্পাদক পদে রয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নার্গিস খাতুন (২০১৯-২০)। সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে আছেন সারাফ আনজুম বিভা (২০২১-২২)।
মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আবিদা আক্তার লাবনী, মোছা. স্বপ্না আক্তার, সাইয়িদা হাফছা, মোছা. সুমাইয়া মুস্তারিন মুন, হেমা আক্তার ইভা, সামসাদ জাহান ও মোছা. নিশা আক্তার। সহকারী সম্পাদক (মহিলা বিষয়ক) পদে রয়েছেন হাসনাহেনা বর্ষা, নুসরাত জাহান অহনা, নাদিয়া হক, জান্নাতুল ফেরদৌসি তৃষা জান্নাত, শ্রেয়সী রায়, সামিয়া জাহান, ফারহিন শবনম শায়ন্তি, নূসরাত আফরিন ও নূসরাত ঈষিতা।
এছাড়া সহকারী সম্পাদক (পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ) পদে আছেন মোছা. ইশিথা পারভিন তিথি ও মাসুমা ইসরাত মুমু। কার্যনির্বাহী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তামান্না আক্তার, জান্নাতুন নাঈম তুহিনা, ইউষা জান্নাত সোহা, রেনেসা রাত্রী ও তাহরিমা আক্তার।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
শিক্ষার্থীরা বলছেন, এত বড় সংখ্যক নারী প্রার্থীর অংশগ্রহণ শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে বৈচিত্র্যময় করছে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে নারীর নেতৃত্ব, নীতি নির্ধারণে অংশগ্রহণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভূমিকা ক্রমশ শক্তিশালী করছে।
জিএস প্রার্থী নুসরাত জাহান নুপুর বলেন, রাকসু যেহেতু ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে পরিচালিত গণতান্ত্রিক মঞ্চ, তাই শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমার লক্ষ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও ছাত্রবান্ধব পরিবেশে গড়ে তোলা।
ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, তফসিল ঘোষণার আগেই সাইবার টিম গঠনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু সাইবার বুলিংয়ের কারণে অনেক নারী শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ থেকে বিরত থেকেছেন। নির্বাচিত হলে আগামী এক বছরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করব, যোগ করেন তিনি।