সাংবাদিক আনিস আলমগীর তার ফেসবুক পোস্টে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আসিফ নজরুল ২০২৪ সালের ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের তুলনা টেনে যে মন্তব্য করেছেন, তাকে তিনি ইতিহাস বিকৃতি এবং শহিদদের রক্তের প্রতি চরম অবমাননা বলে উল্লেখ করেন। নিচে তার সম্পূর্ণ ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে হালকা করে দেখানোর যে চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য।
তিনি বলেছিলেন-“শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও মনে হয় এত জঘন্য অপরাধ করে নাই।”
এই মন্তব্য শুধু অযৌক্তিকই নয়, মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের রক্তের প্রতি নির্মম অবমাননা। প্রথমে ভেবেছিলাম তার এ বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করব। কিন্তু পরে দেখি, তিনি নিজেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন—যদিও তা কতটা আন্তরিক, সে প্রশ্ন থেকে যায়। তবু, কেউ ভুল বুঝতে পেরে সংশোধনের চেষ্টা করলে তা সাধুবাদযোগ্য। কিন্তু তার বক্তব্যে আরও কিছু উদ্বেগজনক দিক রয়েছে, যা শুধু ব্যক্তিগত মত নয়—বরং বিচারব্যবস্থা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
যেমন তিনি বলেছেন: “এই বিচার নিয়ে আপনাদের হতাশ হওয়ার কিছু নাই। আমাদের সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত রায় পাবেন।”
সঙ্গে আরও বলেছে —“এমনভাবে বিচারের সাক্ষ্যপ্রমাণ রেখে যাওয়া হবে, ভবিষ্যতে কোনো সরকার চাইলেও বিচার থেকে সরতে পারবে না।”
এই কথাগুলো একটি হুমকির মতো শোনায়, যা বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের নগ্ন ইঙ্গিত বহন করে। “আমাদের সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত রায়”—এটা কোনো আইনি ভাষ্য নয়, বরং প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাবের প্রকাশ। বিচার নয়, যেন এক রাজনৈতিক প্রতিশোধের ঘোষণা। এইসব কারণেই শেখ হাসিনাসহ যাদের এখন বিচার করা হচ্ছে সেই বিচার আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য তো হবেই না, অভ্যন্তরীণ অঙ্গনেও প্রশ্ন দেখা দেবে। ক্ষমতার খেলায় মসনদ উল্টে গেলে এই রায়গুলো উল্টে যাবে। কিংবা বস্তা বন্দি হয়ে থাকবে।
৫ আগস্ট এর পর থেকে আসিফ নজরুলরা বারবার চেষ্টা করছেন ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকারের পতন বা পরিবর্তনের ঘটনাকে ১৯৭১ সালের মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধের সমতুল্য করে তোলার। স্বাধীনতা যুদ্ধের নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করছেন কথিত বুদ্ধিজীবীদের দিয়ে। এটি ইতিহাস বিকৃতি, এটি মহান মুক্তিযুদ্ধের অপমান।
আরও ভয়ংকর হলো, এই প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সেই সব চিহ্নিত অপশক্তি-যারা একাত্তরে দেশের বিরুদ্ধে ছিল, রাজাকার ছিল, পাকিস্তানের এজেন্ট ছিল। আজ তারা নতুন মুখোশ পরে আওয়ামী বিরোধী প্রগতিশীল প্ল্যাটফর্মে ঢুকে পড়েছে এবং এর উপর ভর করে ৭১ এর ইতিহাস মুছে দিতে চাচ্ছে।
তাদের কৌশল খুব স্পষ্ট: একাত্তরের সাথে ২৪ কে তুলনা করার মানে হল, একাত্তরের জেনোসাইডকে হালকা করা, শহিদদের রক্তকে অবমূল্যায়ন করা, এবং সেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধীদের ‘নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য’ করে তোলা। এটি রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক, নৈতিকভাবে কলুষিত এবং ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
আমরা এই প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করি। জাতির অস্তিত্বের লড়াই, স্বাধীনতার সংগ্রাম আর ক্ষমতার পালাবদলের লড়াই এক জিনিস নয়।
০
“আসিফ নজরুল ইতিহাস বিকৃত করছেন”-ফেসবুকে আক্রমণাত্মক পোস্ট আনিস আলমগীরের
সাংবাদিক আনিস আলমগীর তার ফেসবুক পোস্টে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আসিফ নজরুল ২০২৪ সালের ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের তুলনা টেনে যে মন্তব্য করেছেন, তাকে তিনি ইতিহাস বিকৃতি এবং শহিদদের রক্তের প্রতি চরম অবমাননা বলে উল্লেখ করেন। নিচে তার সম্পূর্ণ ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে হালকা করে দেখানোর যে চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য।
তিনি বলেছিলেন-“শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও মনে হয় এত জঘন্য অপরাধ করে নাই।”
এই মন্তব্য শুধু অযৌক্তিকই নয়, মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের রক্তের প্রতি নির্মম অবমাননা। প্রথমে ভেবেছিলাম তার এ বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করব। কিন্তু পরে দেখি, তিনি নিজেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন—যদিও তা কতটা আন্তরিক, সে প্রশ্ন থেকে যায়। তবু, কেউ ভুল বুঝতে পেরে সংশোধনের চেষ্টা করলে তা সাধুবাদযোগ্য। কিন্তু তার বক্তব্যে আরও কিছু উদ্বেগজনক দিক রয়েছে, যা শুধু ব্যক্তিগত মত নয়—বরং বিচারব্যবস্থা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
যেমন তিনি বলেছেন: “এই বিচার নিয়ে আপনাদের হতাশ হওয়ার কিছু নাই। আমাদের সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত রায় পাবেন।”
সঙ্গে আরও বলেছে —“এমনভাবে বিচারের সাক্ষ্যপ্রমাণ রেখে যাওয়া হবে, ভবিষ্যতে কোনো সরকার চাইলেও বিচার থেকে সরতে পারবে না।”
এই কথাগুলো একটি হুমকির মতো শোনায়, যা বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের নগ্ন ইঙ্গিত বহন করে। “আমাদের সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত রায়”—এটা কোনো আইনি ভাষ্য নয়, বরং প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাবের প্রকাশ। বিচার নয়, যেন এক রাজনৈতিক প্রতিশোধের ঘোষণা। এইসব কারণেই শেখ হাসিনাসহ যাদের এখন বিচার করা হচ্ছে সেই বিচার আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য তো হবেই না, অভ্যন্তরীণ অঙ্গনেও প্রশ্ন দেখা দেবে। ক্ষমতার খেলায় মসনদ উল্টে গেলে এই রায়গুলো উল্টে যাবে। কিংবা বস্তা বন্দি হয়ে থাকবে।
৫ আগস্ট এর পর থেকে আসিফ নজরুলরা বারবার চেষ্টা করছেন ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকারের পতন বা পরিবর্তনের ঘটনাকে ১৯৭১ সালের মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধের সমতুল্য করে তোলার। স্বাধীনতা যুদ্ধের নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করছেন কথিত বুদ্ধিজীবীদের দিয়ে। এটি ইতিহাস বিকৃতি, এটি মহান মুক্তিযুদ্ধের অপমান।
আরও ভয়ংকর হলো, এই প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সেই সব চিহ্নিত অপশক্তি-যারা একাত্তরে দেশের বিরুদ্ধে ছিল, রাজাকার ছিল, পাকিস্তানের এজেন্ট ছিল। আজ তারা নতুন মুখোশ পরে আওয়ামী বিরোধী প্রগতিশীল প্ল্যাটফর্মে ঢুকে পড়েছে এবং এর উপর ভর করে ৭১ এর ইতিহাস মুছে দিতে চাচ্ছে।
তাদের কৌশল খুব স্পষ্ট: একাত্তরের সাথে ২৪ কে তুলনা করার মানে হল, একাত্তরের জেনোসাইডকে হালকা করা, শহিদদের রক্তকে অবমূল্যায়ন করা, এবং সেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধীদের ‘নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য’ করে তোলা। এটি রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক, নৈতিকভাবে কলুষিত এবং ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
আমরা এই প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করি। জাতির অস্তিত্বের লড়াই, স্বাধীনতার সংগ্রাম আর ক্ষমতার পালাবদলের লড়াই এক জিনিস নয়।
০
সাংবাদিক আনিস আলমগীর তার ফেসবুক পোস্টে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আসিফ নজরুল ২০২৪ সালের ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের তুলনা টেনে যে মন্তব্য করেছেন, তাকে তিনি ইতিহাস বিকৃতি এবং শহিদদের রক্তের প্রতি চরম অবমাননা বলে উল্লেখ করেন। নিচে তার সম্পূর্ণ ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে হালকা করে দেখানোর যে চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য।
তিনি বলেছিলেন-“শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও মনে হয় এত জঘন্য অপরাধ করে নাই।”
এই মন্তব্য শুধু অযৌক্তিকই নয়, মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের রক্তের প্রতি নির্মম অবমাননা। প্রথমে ভেবেছিলাম তার এ বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করব। কিন্তু পরে দেখি, তিনি নিজেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন—যদিও তা কতটা আন্তরিক, সে প্রশ্ন থেকে যায়। তবু, কেউ ভুল বুঝতে পেরে সংশোধনের চেষ্টা করলে তা সাধুবাদযোগ্য। কিন্তু তার বক্তব্যে আরও কিছু উদ্বেগজনক দিক রয়েছে, যা শুধু ব্যক্তিগত মত নয়—বরং বিচারব্যবস্থা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
যেমন তিনি বলেছেন: “এই বিচার নিয়ে আপনাদের হতাশ হওয়ার কিছু নাই। আমাদের সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত রায় পাবেন।”
সঙ্গে আরও বলেছে —“এমনভাবে বিচারের সাক্ষ্যপ্রমাণ রেখে যাওয়া হবে, ভবিষ্যতে কোনো সরকার চাইলেও বিচার থেকে সরতে পারবে না।”
এই কথাগুলো একটি হুমকির মতো শোনায়, যা বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের নগ্ন ইঙ্গিত বহন করে। “আমাদের সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত রায়”—এটা কোনো আইনি ভাষ্য নয়, বরং প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাবের প্রকাশ। বিচার নয়, যেন এক রাজনৈতিক প্রতিশোধের ঘোষণা। এইসব কারণেই শেখ হাসিনাসহ যাদের এখন বিচার করা হচ্ছে সেই বিচার আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য তো হবেই না, অভ্যন্তরীণ অঙ্গনেও প্রশ্ন দেখা দেবে। ক্ষমতার খেলায় মসনদ উল্টে গেলে এই রায়গুলো উল্টে যাবে। কিংবা বস্তা বন্দি হয়ে থাকবে।
৫ আগস্ট এর পর থেকে আসিফ নজরুলরা বারবার চেষ্টা করছেন ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকারের পতন বা পরিবর্তনের ঘটনাকে ১৯৭১ সালের মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধের সমতুল্য করে তোলার। স্বাধীনতা যুদ্ধের নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করছেন কথিত বুদ্ধিজীবীদের দিয়ে। এটি ইতিহাস বিকৃতি, এটি মহান মুক্তিযুদ্ধের অপমান।
আরও ভয়ংকর হলো, এই প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সেই সব চিহ্নিত অপশক্তি-যারা একাত্তরে দেশের বিরুদ্ধে ছিল, রাজাকার ছিল, পাকিস্তানের এজেন্ট ছিল। আজ তারা নতুন মুখোশ পরে আওয়ামী বিরোধী প্রগতিশীল প্ল্যাটফর্মে ঢুকে পড়েছে এবং এর উপর ভর করে ৭১ এর ইতিহাস মুছে দিতে চাচ্ছে।
তাদের কৌশল খুব স্পষ্ট: একাত্তরের সাথে ২৪ কে তুলনা করার মানে হল, একাত্তরের জেনোসাইডকে হালকা করা, শহিদদের রক্তকে অবমূল্যায়ন করা, এবং সেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধীদের ‘নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য’ করে তোলা। এটি রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক, নৈতিকভাবে কলুষিত এবং ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
আমরা এই প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করি। জাতির অস্তিত্বের লড়াই, স্বাধীনতার সংগ্রাম আর ক্ষমতার পালাবদলের লড়াই এক জিনিস নয়।
“আসিফ নজরুল ইতিহাস বিকৃত করছেন”-ফেসবুকে আক্রমণাত্মক পোস্ট আনিস আলমগীরের
সাংবাদিক আনিস আলমগীর তার ফেসবুক পোস্টে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আসিফ নজরুল ২০২৪ সালের ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের তুলনা টেনে যে মন্তব্য করেছেন, তাকে তিনি ইতিহাস বিকৃতি এবং শহিদদের রক্তের প্রতি চরম অবমাননা বলে উল্লেখ করেন। নিচে তার সম্পূর্ণ ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে হালকা করে দেখানোর যে চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য।
তিনি বলেছিলেন-“শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও মনে হয় এত জঘন্য অপরাধ করে নাই।”
এই মন্তব্য শুধু অযৌক্তিকই নয়, মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের রক্তের প্রতি নির্মম অবমাননা। প্রথমে ভেবেছিলাম তার এ বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করব। কিন্তু পরে দেখি, তিনি নিজেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন—যদিও তা কতটা আন্তরিক, সে প্রশ্ন থেকে যায়। তবু, কেউ ভুল বুঝতে পেরে সংশোধনের চেষ্টা করলে তা সাধুবাদযোগ্য। কিন্তু তার বক্তব্যে আরও কিছু উদ্বেগজনক দিক রয়েছে, যা শুধু ব্যক্তিগত মত নয়—বরং বিচারব্যবস্থা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
যেমন তিনি বলেছেন: “এই বিচার নিয়ে আপনাদের হতাশ হওয়ার কিছু নাই। আমাদের সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত রায় পাবেন।”
সঙ্গে আরও বলেছে —“এমনভাবে বিচারের সাক্ষ্যপ্রমাণ রেখে যাওয়া হবে, ভবিষ্যতে কোনো সরকার চাইলেও বিচার থেকে সরতে পারবে না।”
এই কথাগুলো একটি হুমকির মতো শোনায়, যা বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের নগ্ন ইঙ্গিত বহন করে। “আমাদের সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত রায়”—এটা কোনো আইনি ভাষ্য নয়, বরং প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাবের প্রকাশ। বিচার নয়, যেন এক রাজনৈতিক প্রতিশোধের ঘোষণা। এইসব কারণেই শেখ হাসিনাসহ যাদের এখন বিচার করা হচ্ছে সেই বিচার আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য তো হবেই না, অভ্যন্তরীণ অঙ্গনেও প্রশ্ন দেখা দেবে। ক্ষমতার খেলায় মসনদ উল্টে গেলে এই রায়গুলো উল্টে যাবে। কিংবা বস্তা বন্দি হয়ে থাকবে।
৫ আগস্ট এর পর থেকে আসিফ নজরুলরা বারবার চেষ্টা করছেন ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকারের পতন বা পরিবর্তনের ঘটনাকে ১৯৭১ সালের মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধের সমতুল্য করে তোলার। স্বাধীনতা যুদ্ধের নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করছেন কথিত বুদ্ধিজীবীদের দিয়ে। এটি ইতিহাস বিকৃতি, এটি মহান মুক্তিযুদ্ধের অপমান।
আরও ভয়ংকর হলো, এই প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সেই সব চিহ্নিত অপশক্তি-যারা একাত্তরে দেশের বিরুদ্ধে ছিল, রাজাকার ছিল, পাকিস্তানের এজেন্ট ছিল। আজ তারা নতুন মুখোশ পরে আওয়ামী বিরোধী প্রগতিশীল প্ল্যাটফর্মে ঢুকে পড়েছে এবং এর উপর ভর করে ৭১ এর ইতিহাস মুছে দিতে চাচ্ছে।
তাদের কৌশল খুব স্পষ্ট: একাত্তরের সাথে ২৪ কে তুলনা করার মানে হল, একাত্তরের জেনোসাইডকে হালকা করা, শহিদদের রক্তকে অবমূল্যায়ন করা, এবং সেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধীদের ‘নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য’ করে তোলা। এটি রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক, নৈতিকভাবে কলুষিত এবং ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
আমরা এই প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করি। জাতির অস্তিত্বের লড়াই, স্বাধীনতার সংগ্রাম আর ক্ষমতার পালাবদলের লড়াই এক জিনিস নয়।