আরেকটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করল পাকিস্তান

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা যুদ্ধের রূপ ধারণ করতে চলেছে ইতোমধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হুমকি-ধমকির পর এবার বাস্তবিকই পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। এ হামলার কঠিন জবাব দিতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তানও। প্রতিশোধের নেশায় রীতিমতো ফুঁসছে তারা। এরই মধ্যে ভারতকে কঠিন জবাব দিতে প্রয়োজনীয় যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির কাছ থেকে অনুমতিও পেয়ে গেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ভারতকে তার হামলার চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঙ্কার ছেড়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

এরই মধ্যে খবর, পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরের আকাশে শনাক্ত হয়েছে বিস্ফোরক-বোঝাই একটি ভারতীয় ড্রোন। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে সেটিকে ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা বাহিনী। লাহোরের ওয়ালটন বিমানবন্দরের কাছে ড্রোনটি ভূপাতিত করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি বলছে, লাহোরে ভারতীয় গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে বলে রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এর আগে, পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় এই শহরে একটি অজ্ঞাত বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গিয়েছিল।

স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম সামা টিভি জানিয়েছে, লাহোর শহরের ওয়ালটন বিমানবন্দরের কাছে একটি বিস্ফোরক-বোঝাই ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। ড্রোনটি সীমান্তের অপরপাশে তথা ভারতের ভেতর থেকে পরিচালনা করা হচ্ছিল।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরক-বোঝাই এই ড্রোনটির আকার ১.৫ থেকে ১.৮ মিটার (পাঁচ থেকে ছয় ফুট)। এটি ভারতের সীমান্তের ওপার থেকে পরিচালিত হচ্ছিল এবং শহরের সংবেদনশীল ভবনগুলোর দিকে যাচ্ছিল।

এর আগে, প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও জানিয়েছিল, পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোর শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।

এরপর থেকে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে পরিস্থিতি, রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করেছে যা এখন।

গত মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে অন্তত ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে দাবি করছে পাকিস্তান। ভারতের হামলার পরপরই দেশটির ৫টি অত্যাধুনিক বিমানসহ একটি সেনা সদরদপ্তর গুঁড়িয়ে দিয়েছে তাদের সেনারা। এমনকি ভারতকে কঠিন জবাব দিতে প্রয়োজনীয় যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের অনুমতিও পেয়ে গেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

শুধু তাই নয়, ভারতের হামলায় ঝরা প্রতি ফোঁটা রক্তের চরম বদলা নেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *