ভারতের হামলার জবাবে পাল্টা আঘাতের অনুমতি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা যুদ্ধাবস্থার রূপ নিতে যাচ্ছে। টানা দুই সপ্তাহের হুমকি-ধমকির পর ভারত পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এর জবাবে পাল্টা হামলার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে নীতিগত অনুমতি দিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি)।

বুধবার (৭ মে) প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। পাকিস্তানি গণমাধ্যম দ্য ডন-এর খবরে জানানো হয়, ভারতীয় হামলার জবাবে ‘উপযুক্ত সময় ও স্থানে’ পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে পাকিস্তানের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে বলেও বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।

এনএসসি-এর বিবৃতিতে বলা হয়, “নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ও সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীকে পরিস্থিতি অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”

এদিকে, পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর ভারত কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফফরাবাদে ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তান এরই মধ্যে এর জবাব দিতে শুরু করেছে বলেও জানান আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী।

ভারত জানিয়েছে, তারা ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামের অভিযানে আজাদ কাশ্মীরের ৯টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। ভারতীয় পক্ষের দাবি, এসব হামলায় পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া সন্ত্রাসী সংগঠন—লস্কর-ই-তৈয়বা, জইশ-ই-মোহাম্মদ ও হিজবুল মুজাহিদিনের অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু ছিল, এবং এতে অন্তত ৭০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তান বলছে, এ হামলায় নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে ভয়াবহ এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এটি ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় হামলা। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। ভারত এর জেরে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে, আর পাকিস্তান জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিতের পাশাপাশি আকাশসীমা ও বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *