দেশে শুরু হচ্ছে ‘ভি-টিউটর মাইক্রোসফট অফিস স্পেশালিস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ’

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজন হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতা ‘মাইক্রোসফট অফিস স্পেশালিস্ট (এমওএস) বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫’। দেশের তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ করে তুলতে প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করছে ভি-টিউটর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। অলিম্পিয়াডের আদলে জাতীয় পর্যায়ে এই প্রতিযোগিতা আগামী ১০মে থেকে শুরু হচ্ছে। ।

বুধবার (৭ মে) সকালে রাজধানীর হোটেল রেডিসনে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তুলে ধরেন ভি টিউটরের কো-ফাউন্ডার ও চিফ লার্নিং অফিসার কাজী শামীম। এসময় প্রতিযোগিতার লোগো উন্মোচন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী মোশতাক জহির।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজধানীর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন ক্যাটগরিতে অনুষ্ঠিত হবে এই প্রতিযোগিতা। ১৩ থেকে ২২ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত এই প্রতিযোগিতা। যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস প্রফেশনালস, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি এবং ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

এই আয়োজন ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলছেন আয়োজকরা। তারা জানান, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশ নিতে পারবেন সর্বোচ্চ ৩০০ জন। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে গ্রুমিং শেসন।

প্রতিযোগীরা মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ারপয়েন্ট–এই তিনটি বিষয়ের উপর দক্ষতা যাচাইয়ের সুযোগ পাবেন। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকেই আন্তর্জাতিক মানের স্বীকৃতি পাবেন এবং বিজয়ীরা পাবেন মাইক্রোসফট অফিসিয়াল সার্টিফিকেশন। জাতীয় পর্যায়ের চ্যাম্পিয়নরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অংশ নেবেন যুক্তরাষ্ট্রের অরল্যান্ডো, ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে, যেখানে তারা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন।

প্রতিযোগিতার কাঠামো অনুযায়ী, বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ তিনজনকে “চ্যাম্পিয়ন” হিসেবে নির্বাচিত করা হবে। সেখান থেকে জাতীয় পর্যায়ের জন্য বাছাই করা হবে শীর্ষ ১০ জনকে। এ ছাড়া এলএস (লং লিস্টেড) প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে সেরা ৩ জনকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ‘গালা রাউন্ড’, যার আগে আয়োজন করা হবে একটি বিশেষ গ্রুমিং সেশন। গালা রাউন্ডের বিজয়ীরা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রতিযোগিতার মোট পুরস্কার মূল্য যুক্তরাষ্ট্র সফরসহ ২০ লক্ষ টাকা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম স্থানের জন্য ৮,০০০ ডলার, দ্বিতীয় স্থান ৪,০০০ ডলার এবং তৃতীয় স্থান ২,০০০ ডলার পাবেন।

ব্যক্তিগত ইমেইল ও ফোন নম্বর দিয়ে ক্যারিয়ার গঠনের ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ভি-টিউটরের ওয়েবে নিবন্ধন করা যাবে। অংশগ্রহণকারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকলেও নিবন্ধন ফি হিসেবে দিতে হবে ৩০০ টাকা। দ্বিতীয় রাউন্ড চলবে ২১ মে পর্যন্ত। জাতীয় রাউন্ড হবে ২৩ মে এবং ২৪ মে গালা রাউন্ড।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে ডিজিটাল দক্ষতায় পারদর্শী ও আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বক্তারা। এসময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী মোশতাক জহির তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যুথবদ্ধ মেলবন্ধনের ও গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রেদোয়ান হক বলেন, ৩৭তম বিসিএসে এত বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ হয়েছিল যে তা ব্রুনাইয়ের জনসংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এই প্রবণতা আমাদের জনশক্তিকে অকার্যকর করে তুলছে। আমাদের নতুন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, বদলাতে হবে চিন্তাধারা।

ভি-টিউটরের কো-ফাউন্ডার কাজী শামীম বলেন, বাংলাদেশের তরুণদের আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম দিতে চাই, যেখানে তারা আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতা ও সার্টিফিকেশন অর্জন করে বিশ্বমঞ্চে প্রতিযোগিতা করতে পারে। এমওএস (MOS) চ্যাম্পিয়নশিপ শুধুমাত্র একটি প্রতিযোগিতা নয়—এটি একটি সচেতনতামূলক আন্দোলন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অফ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্চিনিয়ারিং-এর ডিন ড. আহমেদ ওয়াসিফ রেজা এবং আয়োজনের প্রধান স্পন্সর মেঘনা গ্রুপ অফ ইনডাস্ট্রিজ-এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী মো: মহিউদ্দিন ও হসপিটালিটি পার্টনার রেডিসন ব্লু-র সেলস ও মার্কেটিং পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, চিফ ইয়ুথ অ্যাডভাইজার কাজী মুস্তাক জহির প্রমুখ।

প্রসঙ্গত-ভি-টিউটর হলো সার্টিপোর্ট (Certiport) অনুমোদিত বাংলাদেশের অথরাইজড পার্টনার, যারা দেশের তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে গ্লোবাল সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *