বেসরকারি খাতের মেঘনা, এনআরবি ও এনআরবিসি ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার (১২ মার্চ) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মেঘনা, এনআরবি ও এনআরবিসি ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) নতুন বোর্ড গঠন করা হবে।
শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পর ঋণ অনিয়ম ও আর্থিক খাতের পুনর্গঠনে নানা উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর অংশ হিসেবে গত বছরের আগস্ট থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠনের কাজ শুরু হয়।
এর আগে ইসলামি ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), এক্সিম ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়।
সেসময় দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম নিয়ন্ত্রণাধীন ১১টি ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠিত হয়। এবার দ্বিতীয় দফায় মেঘনা, এনআরবি ও এনআরবিসি ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ব্যাংক খাত সংস্কারে একগুচ্ছ কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেন। এর মধ্যে বিতর্কিত মালিকানার হাত থেকে ইসলামী ব্যাংক, এসআইবিএল ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এছাড়া আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, কঠোর নজরদারির মাধ্যমে অর্থপাচার রোধ, মূল্যস্ফীতি কমাতে নীতি সুদহার বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে ইতোমধ্যে মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে নেমে এসেছে।
গত কয়েক বছর ধরেই নানা সংকটে রয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। বিশেষ করে একদল প্রভাবশালীর নিয়ন্ত্রণ, ঋণ জালিয়াতি, বিদেশে অর্থপাচার, লাগামহীন খেলাপি ঋণ ও তারল্য সংকট ব্যাংক খাতকে বিপর্যস্ত করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপের ফলে ব্যাংক খাত ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার পথে এগোচ্ছে। গভর্নরের আশাবাদ, ব্যাংক খাতে চলমান সংস্কার পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে শিগগিরই আরও ইতিবাচক ফল দেখা যাবে।