‘মাগুরার ধর্ষণের শিকার শিশুটির ছবি সামাজিক মাধ্যম থেকে সরাতে হবে’

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (৯ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)কে দুপুর সোয়া ১২টার মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করার পর হাইকোর্ট এ আদেশ দেয়। আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান জানান, মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে শিশুটির ছবি প্রকাশিত হওয়ায় আদালত এ নির্দেশনা দেন। আদালত শিশুটির গোপনীয়তা রক্ষা ও মানসিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, বিটিআরসিকে ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম থেকে শিশুটির ছবি দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা নিতে হবে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার পর আদালত পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন বলে জানানো হয়েছে।

গত বুধবার (৫ মার্চ) মাগুরায় শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। ঘটনার পর তাকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও উন্নতি না হওয়ায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন। শিশুটির মা ইতিমধ্যে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, শিশুটির শ্বশুর তার মেয়ের স্বামীর সহায়তায় শিশুটিকে ধর্ষণ করেছেন। এ ঘটনায় শিশুটির শাশুড়ি ও ভাশুরও জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। মাগুরার এ ঘটনায় সারাদেশে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হচ্ছে। শিশুটির দ্রুত সুস্থতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। হাইকোর্টের এ নির্দেশকে শিশুটির গোপনীয়তা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *