মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের এক শিশুর অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন। ঘটনার চার দিন পরও শিশুটির জ্ঞান ফেরেনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) থেকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়েছে। শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে এবং কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে।
ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর শনিবার (৮ মার্চ) মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শিশুটির মা। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, শিশুটির বড় বোনের স্বামী ও শ্বশুরের সহায়তায় শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির শাশুড়ি ও ভাশুরও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। মামলায় আরও বলা হয়েছে, ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যার চেষ্টাও চালানো হয়েছিল।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বুধবার (৫ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে শিশুটির বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন মেঝেতে পড়ে আছে। শিশুটি জানায়, তার যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। পরে শিশুটি বড় বোনকে জানায়, রাতে তার দুলাভাই (বোনের স্বামী) দরজা খুলে দিলে তার শ্বশুর তাকে জোর করে ধর্ষণ করেন। শিশুটি চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে মেঝেতে ফেলে রেখে যায়।
শিশুটির বড় বোন সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার ২০ দিন আগেও তার শ্বশুর তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিষয়টি তিনি তার স্বামীকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি। পরে তিনি বাবার বাড়ি চলে যান। কিন্তু পরিবারের চাপে ছোট বোনকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ফিরতে বাধ্য হন।
শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে এবং অভিযুক্তরা ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন।
এই ঘটনায় স্থানীয় সম্প্রদায় ও সামাজিক মাধ্যমগুলোতে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হচ্ছে। শিশুটির দ্রুত সুস্থতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।