দুর্নীতির অভিযোগের মুখে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের ওপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে। এবার তার দুর্নীতিবিরোধী দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির দুর্নীতিবিরোধী জোট। এই জোটে রয়েছে অক্সফাম ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতো বৈশ্বিক সংস্থাগুলো।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ বিষয়ে তদন্ত করছে, যেখানে তার খালা ও বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও রয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পের ব্যয় কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে এর মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত করা হয়।
দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে টিউলিপকে বরখাস্ত করার দাবি জানান। তবে স্টারমারের মুখপাত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রীর প্রতি “পূর্ণ আস্থা” রাখছেন।
দুর্নীতিবিরোধী জোট ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন বলেছে, “টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক অপরাধ মোকাবিলার দায়িত্বে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগের কারণে এটি এখন স্পষ্ট নয় যে তিনি এ দায়িত্ব পালন করার অবস্থানে আছেন কিনা।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের একটি ফ্ল্যাট উপহার পেয়েছিলেন, যা বাংলাদেশি ডেভেলপার আবদুল মোতালিফ প্রদান করেন। তিনি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের অংশ হিসেবে দেশের বড় ব্যাংকগুলোকে তাদের অ্যাকাউন্টের লেনদেনের বিবরণ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এমন অবস্থায় টিউলিপকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরাতে বিরোধী দল এবং দুর্নীতিবিরোধী জোট থেকে ক্রমাগত চাপ তৈরি হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার এখনো তার মন্ত্রীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতি যুক্তরাজ্যের সরকারের আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও স্বচ্ছতার প্রশ্নে বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।