ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের এক মাস পূর্তি হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর)। এ উপলক্ষে এদিন সারাদেশে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। এ সময় হাসনাত আব্দুল্লাহ, আবু বাকের মজুদারসহ অন্য সমন্বয়করাও উপস্থিত ছিলেন। মূলত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ও রূপরেখা জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলন থেকে গেলো জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন সমন্বয়করা।
সারজিস জানান, রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু করে নিউমার্কেট, মানিক মিয়া এভিনিউ, কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হবে তাদের ‘শহীদি মার্চ’।
আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কাজ করবে ছাত্র আন্দোলন। তবে আইন নিজের কাঁধে তুলে নেওয়া যাবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, যারা হত্যার সাথে জড়িত তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের চিহ্নিত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে একটি টিম গঠন করা হচ্ছে। জনগণ যেভাবে চায়, সেভাবে গঠন হবে আগামীর বাংলাদেশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেশব্যাপী পুনর্গঠিত হবে। তাদের উদ্দেশ্য হবে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ।
প্রসঙ্গত-সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ১৬ আগস্ট সেই আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়। সেদিন রংপুরে আবু সাঈদসহ ছয়জন মারা যান। পরের কয়েক দিনের আন্দোলনে পুলিশের গুলি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় শত শত মানুষ নিহত হন। মাঝে ইন্টারনেট বন্ধ এবং কারফিউ জারি করে আন্দোলন কিছুটা স্থিমিত করলেও আগস্টের শুরুতে তা আবার ভয়াবহ রূপ নেয়। অবশেষে ৫ আগস্ট আন্দোলনের চাপে বাধ্য হয়ে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এই আন্দোলনে হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন, যাদের একটি বড় অংশ ছাত্র।