বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেছেন, ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে এখনো প্রভাব পড়েনি। উজানে গঙ্গা নদীর পানি স্থির এবং বাংলাদেশ অংশেও একই অবস্থা। বর্তমানে নদীর পানি বিপৎসীমার অনেকটা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী কয়েকদিন স্থির অবস্থায় থাকবে এবং বন্যা হওয়ার মতো পরিস্থিতি আপাতত নেই।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশে চলমান ভয়াবহ বন্যার মধ্যেই ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেটের সবগুলোই খুলে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশ রূপান্তরকে তিনি এ কথা বলেন।
সরদার উদয় রায়হান বলেন, পানি কমেছে। ১৩টি পয়েন্টের মধ্যে ১২টিতে পানি নিচে নেমে গেছে। এছাড়া পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, এটি অব্যাহত থাকবে। স্বাভাবিকভাবে বলতে পারি বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে আছে। ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও তাতে পানি বাড়ার সম্ভাবনা নেই।
অপরদিকে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ও প্রবীণ প্রকৌশলী ম ইনামুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ফারাক্কার মোট গেট ১০৯টি। সবসময় কিছু খোলা থাকে। বর্ষার সময় আরো খোলে। এখন সবকটি খোলা হচ্ছে। তিনি আপাতত বন্যার সম্ভাবনা নেই বলে জানান।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টি আর বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে পানি ছাড়ার কারণে চাপ বাড়ছে ফারাক্কা ব্যারেজে। তাই ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় দৈনন্দিন পানি ছাড়ার পরিমাণ বাড়ছে। যদিও বাকি সময়ে আপ স্ট্রিমে পানি যেমন থাকে সেই অনুযায়ী পানি ছাড়া হয় ডাউনস্ট্রিমে। গঙ্গার পানির স্তর বৃদ্ধির কারণে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্প সূত্রের খবর, যে পরিমাণ পানি আসছে, সেই পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৭৭.৩৪ ডেঞ্জার লেভেল অতিক্রম করেছে। ফারাক্কা ব্যারেজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় পানি ছেড়েছে ভারত।
ফারাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে বলেন, ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় এলার্ট রয়েছে। প্রতি মুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে তাতে ১০৯ গেটের সবকটি খুলে না দিল ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। এর ফলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।