থমথমে ঢাবি, ছাত্রলীগ-আন্দোলনকারী সংঘর্ষে আহত দুই শতাধিক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে অন্তত দুইশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে তাদের অধিকাংশই আশঙ্কামুক্ত। এদের মধ্যে ১১ জনকে ভর্তি রেখেছেন চিকিৎসকরা।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের দিনভর সংঘর্ষের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ক্যাম্পাসে ঢুকেছে পুলিশ। বিভিন্ন হলের সামনে অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সংঘর্ষ আপাতত থামলেও যেকোনো সময় আবার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে বিজয় একাত্তর হল থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ বিকেলে থেমে থেমে চলে। সন্ধ্যায় আরেক দফা সংঘর্ষ চলে শহীদুল্লাহ হল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে। হলের ভেতর থেকে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে। আর বাইরে থেকে হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে।

হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের কর্মচারী মো. মিজান বলেন, দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র ১১ জনকে ভর্তি দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় ভর্তি ১১ জনকে ভর্তি দেয়া হয়েছে। তবে রোগীদের মধ্যে কেউ গুরুতর নয়। তাদের অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। আর বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

হাসপাতালে ভর্তি ১১ শিক্ষার্থীর মধ্যে রয়েছেন- ইয়াকুব (২১), কাজী তাসনিম ফেরদৌসী (২৪), অমি (২৬), আমিনুর (২২), শুভ (২০), গিয়াস উদ্দিন (২০), নাসির (২৩), অপি (২২), মেহেদি (২২), সিয়াম (২২) ও হাসিব (২২)।

এদিকে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের চত্বরে ও ভেতরেও দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পুরো হাসপাতাল জুড়ে রোগীদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত হাসপাতালে নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকা জরুরি বিভাগে বাড়তি আনসার সদস্যদের দেখা গেলেও হাসপাতালে চত্বরে কোনো অতিরিক্ত পুলিশ দেখা যায়নি। হাসপাতালে চত্বর ও আশেপাশে এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। হাসপাতালে কয়েকজনকে ছাত্রলীগ হিসেবে চিহ্নিত করে আন্দোলনকারীরা মারধর করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এ সময় শিক্ষার্থীদের হলে ফিরে যাওয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তারা অনুরোধ করলে তাদের সঙ্গে অনেককেই বাগবিতণ্ডায় জড়াতে দেখা গেছে।

এদিকে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে হল প্রভোস্টদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মাকসুদ কামাল। বৈঠক শেষে তিনি জানিয়েছেন, আজ রাতে হল প্রভোস্টরা নিজ নিজ হলে অবস্থান করবেন। এছাড়া আরও কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা বিজ্ঞপ্তিতে আকারে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *