জামাইকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে আসামি শ্বশুর

মেয়েকে পাচার ও হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে এমন মামলা করে ফেঁসে গেলেন শ্বশুর নিজেই। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে নেত্রকোনা পিবিআই পালিয়ে থাকা মেয়ে লিয়া আক্তারকে (২৭) উদ্ধার করেছে। মেয়েকে লুকিয়ে রেখে মিথ্যা মামলা করার ঘটনায় বাদী আব্দুল খালেককে (৬০) আসামি করে জামাই মামলা করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায়।

মঙ্গলবার রাতে ঢাকার তুরাগ ধউর এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে পিবিআই লিয়াকে উদ্ধার করে। পরে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এ ঘটনায় লিয়ার স্বামী বিদ্যা মিয়া (৩৭) বাদী হয়ে শ্বশুর আ. খালেক (৬০), শাশুড়ি রোকেয়া আক্তার (৫৭), ও খালা শাশুড়ি আঙ্গুরা (৫০)-কে আসামি করে আদালতের নির্দেশে কেন্দুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

পিবিআই, পুলিশ, ভুক্তভোগী ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের চন্দলাড়া গ্রামের আ. খালেকের মেয়ে লিয়া আক্তারের সাথে নওয়াপাড়া ইউনিয়নের নওয়াপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে বিদ্যা মিয়ার বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ৫ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তিন বছর ধরে চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করার সময় লিয়া স্বামীর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিলেন। পরবর্তীতে ফিরে আসলে বিদ্যা মিয়া তাকে পুনরায় গ্রহণ করেন। কিন্তু চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল লিয়া সন্তানকে স্বামীর বাড়িতে রেখেই নিখোঁজ হন।

এ ঘটনায় শ্বশুর আ. খালেক জামাই বিদ্যা মিয়াকে আসামি করে মেয়েকে পাচার ও হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে অভিযোগে ২৩ এপ্রিল নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন।

আদালত নেত্রকোনা পিবিআইকে মামলার দায়িত্ব দিলে তারা তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে নিশ্চিত হন, এটি সাজানো মামলা। পরে অভিযান চালিয়ে ঢাকার তুরাগ এলাকার ধউর রেনেটা ফ্যাক্টরির পাশের একটি ভাড়া বাসা থেকে কথিত গুম হওয়া লিয়াকে উদ্ধার করে।

পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনুর কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে লিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *