সেন্টমার্টিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ খাদ্য সংকট!

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অভ্যন্তরে সংঘাত চলছেই। এর মধ্যে দেশটির সীমান্ত থেকে বাংলাদেশের দিকেও গুলি ছোড়া হচ্ছে। বুধবার ও শনিবার বাংলাদেশি ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এর জেরে পাঁচ দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে যাত্রী ও পণ্যবাহী সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সেন্টমার্টিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ খাদ্য সংকটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বুধবার সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের বহনকারী ট্রলারে মিয়ানমার থেকে গুলি ছোড়া হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ট্রলার। শনিবারও নাফ নদীর বদরমোকাম মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকায় পণ্যবাহী ট্রলারে গুলির ঘটনা ঘটে। এতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটিতে গুলি লাগে সাতটি। এরপর থেকে ভয়ে সব নৌযান বন্ধ রাখা হয়েছে।

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। তাদের যোগাযোগসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের একমাত্র মাধ্যম নৌযান। দ্বীপের বাসিন্দারা বলছেন, নৌযান বন্ধ থাকায় গত পাঁচ দিন ধরে টেকনাফের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সেন্টমার্টিন। খাদ্য ও পণ্যবাহী বোট চলাচল না করায় সেন্টমার্টিনের দোকানগুলোতে মজুত খাদ্যপণ্য শেষ হতে চলেছে। সেই সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম দ্বিগুণ নিচ্ছেন। এ সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে সংকট তীব্র আকার ধারণ করবে।

দ্বীপের মুদি দোকানি মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ট্রলার বন্ধ থাকায় গত কয়েক দিন টেকনাফ থেকে কোনো পণ্য আনতে পারিনি। চাল ছাড়া দোকানে কিছু নেই। এভাবে চলতে থাকলে দ্বীপের মানুষদের না খেয়ে থাকতে হবে।

সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ জানান, বোটে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখে ট্রলারচালক ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এতে নৌপথে ট্রলার নিয়ে যাতায়াত করতে কেউ রাজি হচ্ছে না। তা ছাড়া ওই পথ ছাড়া সেন্টমার্টিনে আসার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা বা রুটও নেই। প্রতিদিন সেন্টমার্টিন-টেকনাফ নৌপথে ৬-৭টি বোটের মাধ্যমে শতাধিক মানুষ আসা-যাওয়া করার পাশাপাশি খাদ্য ও নিত্যপণ্য বহন করা হতো। নৌযান বন্ধ থাকায় মানুষ খুব বিপদে আছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে খাদ্যপণ্যসহ কোনো মালামাল আনা যাচ্ছে না। অনেক দোকান খালি পড়ে আছে। এর দ্রুত সমাধান করতে হবে।

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, গুলির ঘটনায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে নৌযান বন্ধ রয়েছে। আমরা আপৎকালীন রুট হিসেবে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমে জেটি ঘাটের প্রস্তাব দিয়েছি। এটি ব্যবহার করা গেলে সেখান থেকে নৌযান চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *