আপনি কি জানেন আদা ও হলুদ একসঙ্গে খেলে কী হয়?

আদা কিংবা হলুদের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে নিশ্চয়ই শুনেছেন? আপনি কি জানেন, হলুদ এবং আদা একসঙ্গে খেলেও বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়? এই দুই ভেষজের শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ঔষধি বৈশিষ্ট্যে আমাদের নানাভাবে উপকার করে। হলুদ এবং আদা হলো দুটি প্রাচীনতম প্রাকৃতিক চিকিৎসা, এগুলোর থেরাপিউটিক সুবিধার জন্য ব্যাপকভাবে গবেষণা করা হয়েছে। এই দুই মসলা অসংখ্য স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য বিখ্যাত। বমি বমি ভাব উপশম থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পর্যন্ত কোনটা রেখে কোনটা বলবেন!। হলুদ এবং আদা একসাথে খাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

১. প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে
বায়োমেডিকেল রিসার্চ অনুসারে, হলুদে রাসায়নিক উপাদান কারকিউমিন রয়েছে, যা বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা নিরাময় এবং প্রতিরোধে সহায়তা করে। হলুদ এবং আদা উভয়েই শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য সহ বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ রয়েছে। হলুদের সক্রিয় যৌগ কারকিউমিন এবং আদার মধ্যে পাওয়া জিঞ্জেরল শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজ যেমন আর্থ্রাইটিস এবং প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগের উপশম করে।

২. ব্যথা উপশম
হলুদ এবং আদার প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশমেও সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে এই যৌগগুলো অস্টিওআর্থারাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং পেশী ব্যথার মতো সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

৩. হজমের উন্নতি
আদা এবং হলুদ পরিপাক সুবিধার জন্য পরিচিত। আদা পরিপাক এনজাইমের উৎপাদন এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে গতিশীলতা বাড়িয়ে হজমে সহায়তা করে। হলুদ বদহজম এবং পেট ফাঁপার সমস্যা উপশম করতে সাহায্য করে, পিত্ত উৎপাদন এবং যকৃতের কার্যকারিতা বাড়াতেও কাজ করে এটি।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
হলুদ এবং আদা উভয়েরই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা সংক্রমণ এবং অসুস্থতার বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সামগ্রী ক্ষতিকারক ফ্রি র‌্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে, সেইসঙ্গে সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।

৫. কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য ভালো রাখে
বিভিন্ন গবেষণনায় দেখা গেছে যে, হলুদ এবং আদার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যে অবদান রাখতে পারে। এগুলো নিম্ন স্তরের প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে দূরে রাখতে সাহায্য করতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকির কারণ। সেইসঙ্গে আদা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতেও সাহায্য করে।

৬. মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য
কারকিউমিন এবং জিঞ্জেরলের নিউরোপ্রোটেক্টিভ প্রভাব রয়েছে, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উপকার করে। বয়সের কারণে ভুলে যাওয়া রোধেও কাজ করে আদা ও হলুদ। মস্তিষ্কে প্রদাহ কমাতে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এই দুই উপকারী মসলা।

৭. ক্যান্সার প্রতিরোধ
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে হলুদ এবং আদার মধ্যে থাকা বায়ো-অ্যাক্টিভ যৌগের ক্যান্সার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে। কারকিউমিন এবং জিঞ্জেরল ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে বাধা দেয় এবং বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সারে অ্যাপোপটোসিসকে প্ররোচিত করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *