কোরবানি ওয়াজিব ইবাদত। কোনো ব্যক্তির কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে তার জন্য কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানির গুরুত্ব সম্পর্কে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
কোরবানির দিনের আমলসমূহের মধ্য থেকে পশু কোরবানি করার চেয়ে কোনো আমল আল্লাহ তায়ালার নিকট অধিক প্রিয় নয়। কিয়ামতের দিন এই কোরবানিকে তার শিং, পশম ও ক্ষুরসহ উপস্থিত করা হবে। আর কোরবানির রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহ তায়ালার নিকট কবুল হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে কোরবানি কর। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৪৯৩)
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদিস শরিফে কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে।
হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যার কোরবানির সামর্থ্য আছে তবুও সে কোরবানি করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ (মুসনাদে আহমদ ২/৩২১; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৬৩৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫)
কোরবানির পশু নিজে জবাই করা উত্তম। তবে অন্যকে দিয়েও জবাই করাতে পারবে। এ ক্ষেত্রে কোরবানি দাতা পুরুষ হলে জবাইস্থলে তার উপস্থিত থাকা ভালো। ফাতোয়ায়ে শামি : ৫/২৭)
নবীজি সা.সহ অনেক সাহাবায়ে কেরাম নিজ হাতে কোরবানির পশু জবাই করতেন। হজরত আনাস রা. বলেন,
‘রাসূল সা. এক ঈদে ধূসর রঙের শিংওয়ালা দুটি দুম্বা কোরবানি করলেন। তিনি সেগুলো নিজ হাতে জবাই করলেন এবং জবাইকালে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর’ বললেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬২৪)
হাদিসে আরও আছে, হজরত আয়েশা রা. বলেন, ‘একবার রাসূল সা. আদেশ করলেন, এমন একটি শিংদার দুম্বা আনতে যা কালো আঁধারে হাঁটে, কালো আঁধারে শোয় এবং কালো আঁধারে দেখে, যাতে তিনি তা কোরবানি করতে পারেন। সুতরাং তার জন্য এ রূপ একটি দুম্বা আনা হলো। তখন তিনি বললেন, হে আয়েশা! ছুরিটি দাও, অতঃপর বললেন, পাথরে ছুরিটি ধারালো কর।
আয়েশা রা. বললেন, আমি তা করলাম। অতঃপর তিনি তা গ্রহণ করলেন এবং দুম্বাকে ধরলেন, এরপর তাকে শুয়ালেন এবং জবাই করতে গিয়ে বললেন, বিসমিল্লাহ, হে আল্লাহ! তুমি তা মুহাম্মদ, মুহাম্মদের পরিবার এবং মুহাম্মদের উম্মতগণের পক্ষ থেকে কবুল করুন। অতঃপর তা দ্বারা তিনি লোকদের সকালের নাস্তা খাওয়ালেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫২০৩)