হজ ও ওমরার গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান ফরজ হলো ইহরাম। ইহরাম পরেই হজ-ওমরাযাত্রীদের মিকাত পার হতে হয়।
ইহরাম শব্দের আভিধানিক অর্থ নিষিদ্ধ করা। হজ ও ওমরা করতে ইচ্ছুক ব্যক্তি যখন হজ বা ওমরা কিংবা উভয়টি পালনের উদ্দেশ্যে নিয়ত করে তালবিয়া পাঠ করে, তখন তার ওপর কতিপয় হালাল ও জায়েয বস্তুও হারাম হয়ে যায়।
অর্থাৎ, হজ-ওমরা পালনকারী ব্যক্তি ইহরামের মাধ্যমে নিজের ওপর স্ত্রী সহবাস, মাথার চুল, হাতের নখ, গোঁফ, বগল ও নাভির নিচের ক্ষৌর কর্যাদি, সুগন্ধি ব্যবহার, সেলাই করা পোশাক পরিধান এবং শিকার করাসহ কিছু বিষয়কে হারাম করে নেয়। এ কারণেই এ প্রক্রিয়াটিকে ইহরাম বলা হয়।
ইহরাম না পরে মিকাত অতিক্রম করা জায়েজ নয়। ইহরামের সময় পুরুষেরা সেলাইবিহীন পোশাক পড়েন। নারীরা যেকোনো স্বাভাবিক ঢিলেঢালা পোশাক পরবেন। তাদের ইহরামের জন্য ভিন্ন পোশাক নেই।
নামাজের জন্য যেভাবে তাকবিরে তাহরিমা বাঁধা হয় ঠিক তেমনি হজের জন্য ইহরাম বাধা হয়। আর নামাজে যেমন তাকবিরে তাহরিমার মাধ্যমে স্বাভাবিক সময়ের অন্য হালাল ও বৈধ কাজগুলো নামাজি ব্যক্তির জন্য হারাম হয়ে যায়। ইহরামের মাধ্যমেও হজ ও ওমরা পালনকারী ব্যক্তির জন্যও স্বাভাবিক অবস্থার অনেক হালাল কাজও হারাম হয়ে যায়। এ কারণেই হজ ও ওমরার জন্য ইহরামে ফরজ করা হয়েছে।
হজ অথবা ওমরার নিয়তে তালবিয়া পড়লেই ইহরাম সম্পন্ন হয়ে যায়। তবে ইহরাম বাঁধার সুন্নত পদ্ধতি হলো—
>> মোচ, নখ এবং পরিষ্কার করতে হয় শরীরের এমন লোম চেঁছে বা কেটে পরিষ্কার করা।
>> ইহরামের উদ্দেশ্যে ভালোভাবে গোসল করা। গোসল সম্ভব না হলে অজু করে নেওয়া। ঋতুমতী মহিলার জন্য ইহরামের আগে গোসল করা মুস্তাহাব।
>> পুরুষেরা দুটি নতুন বা সোদা সাদা চাদর নিবে। একটি লুঙ্গির মতো করে পরবে। অপরটি চাদর হিসাবে ব্যবহার করবে।
কালো বা অন্য কোনো শরীয়তসিদ্ধ রং এর কাপড় পরিধান করাও জায়েয। পায়ের পাতার উপরের উঁচু অংশ খোলা থাকে এমন চপ্পল বা স্যান্ডেল পরা যাবে।
>. মহিলাগণ স্বাভাবিক কাপড় পরবে। তারা ইহরাম অবস্থায় জুতা মোজা ব্যবহার করতে পারবে।
>> ইহরাম বাঁধার আগে খালি শরীরে আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করা মুস্তাহাব। শরীরের আতর ও ঘ্রান ইহরাম বাধার পরে বাকী থাকলেও কোনো অসুবিধা নেই।
>>ইহরামের কাপড়ে আতর/সুগন্ধি লাগাবে না। কেননা ইহরামের কাপড়ে এভাবে আতর বা সুগন্ধি লাগানো নিষিদ্ধ যা ইহরামের পরও লেগে থাকে।
>> (মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে) ইহরাম বাঁধার পূর্বে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া ভালো।