ঘটনা যা জানা গেল—২ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকে হামলার সময় পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র নিয়ে যায়। তবে ব্যাংকের ভল্ট ভাঙতে না পারায় টাকা নিতে পারেনি বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে তুলে নিয়ে যায়। এখনো তার সন্ধান মেলেনি।
সোনালী ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির আগে ব্যাংকের পাশে অবস্থিত মসজিদের মুসল্লিদেরও কিছু সময়ের জন্য জিম্মি করে রাখে কেএনএফ সদস্যরা। সেইখান থেকেই তারাবি নামাজ পড়া অবস্থায় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন তারা বান্দরবানের আরেক উপজেলা থানচির কৃষি ও সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরপর এই রকম দুটি ঘটনাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের প্রতি কুকিদের ভয়ংকর বার্তা হিসেবেই দেখছে।
তারপর কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বান্দরবান জেলা পরিষদের উদ্যোগে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করা হয় ২০২৩ সালের মে মাসে। ওই কমিটির সঙ্গে ৫ মার্চ দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয়। এর মধ্যেই ব্যাংক ডাকাতির করে কুকি-চিন।
আগেই বলেছি যে, ২০২২ সালের পর পাহাড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণে মদদ এবং নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে একাধিক সংঘর্ষে জড়ায় সংগঠনটি। সাধারণ পর্যটক থেকে থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অনেকেই তাদের হাতে অপহরণের শিকার হন।
পাহাড়ে এক আতঙ্কের নাম এই সংগঠনটি। আতঙ্কে থেকে এই জনপদকে মুক্ত করতে হবে। এসব সংগঠনের কর্মকাণ্ড সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি। তাই এখানে গভীর দৃষ্টি দেওয়াই জরুরি।
তিন দেশের সীমান্তের মতো স্পর্শকাতর অঞ্চল হিসেবে বান্দরবানের এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের। শুধু পুলিশের উপর নির্ভর করে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। নিরাপত্তা পরিস্থিতি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে আবারও এই অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দায়িত্ব সামরিক বাহিনীর ওপর ন্যস্ত করা যায় কিনা ভাবতে হবে।
লেখক: সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা
প্রধান সম্পাদক : গ্লোবাল টেলিযোগাযোগ