পিতৃহারা-মাতৃহারা, বিচ্ছেদী মা-বাবার সন্তান কিংবা রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া শিশুদের আশ্রয়স্থল ছোটমণি নিবাস।
সিলেট নগরীর বাগবাড়ি এলকায় ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করে ছোটমণি নিবাস। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৩২৬ জন শিশুর স্থান হয়েছে এ নিবাসে৷ বর্তমানে ৩০ জন শিশু রয়েছে নিবাসটিতে, যদিও নিবাসে ধারণ ক্ষমতা ১০০ জনের৷
তবে নামঠিকানাবিহীন এ শিশুরা ফিরতে চায় তাঁদের মা-বাবার কাছে। কেউ বাবাকে দেখে নি, কিংবা কেউ মাকে৷ আপনজনের কাছে ফিরে যাওয়ার আকুতি তাঁদের।
সিলেটের এ নিবাসে বর্তমানে ৬ জন প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে৷ যাদের লালন পালন করতে অনেকটাই বেগ পোহাতে হয় সংশ্লিষ্টদের। তবে নিজের সন্তানের মতো এসব অনাথ শিশুদের লালন পালনে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তাঁরা।
০-৭ বছরের শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব মোটেও সহজ না। তাঁদের পড়াশোনার পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত দিক, মানসিক বিকাশ ও খেলাধুলার নিয়মিত আয়োজন হয়ে থাকে বলে জানান নিবাসের উপতত্ত্বাবধায়ক লাকী পুরকায়স্থ।
বিভাগের একমাত্র ছোটমণি নিবাসটিতে রয়েছে জনবল সংকট। ১৭টি বিভিন্ন পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন অর্ধেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। নার্স ও খণ্ডকালীন ডাক্তার না থাকায় নিবাস থেকে প্রায় দেড় কি.মি দূরের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হয় শিশুদেরকে জরুরি চিকিৎসার জন্য।
জনবল সংকট কাটাতে পারলে নিবাসটির শিশুদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে সমাজে পুনর্বাসন করা সম্ভব বলে মনে করেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুর রফুক।
ভাগ্যের পরিহাসে কিংবা পরিস্থিতির শিকার হয়ে যে কারণেই হোক, যেসব বাবা-মা তাদের সন্তানকে ত্যাগ করছেন কিংবা হারিয়ে ফেলছেন; ছোটমণি নিবাস পরম যত্ন নিয়ে নিচ্ছে সেই হারিয়ে যাওয়া পরিবারহীন শিশুগুলোকে এবং ভরিয়ে তুলছে অন্য কারও কোল। এভাবেই প্রায় দুই দশক ধরে সমাজে সুন্দর একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে চলেছে সিলেটের ছোটমণি নিবাস।