একদিনে ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত, ব্যবহার যুক্তরাষ্ট্রের বোমা

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। রোববার (৩ ডিসেম্বর) গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের মহাপরিচালক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকায় এখন ১৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন।

তিনি জানিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত বোমা হামলার কারণে ১৫ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

তাছাড়া ৫২ দিন ধরে গাজায় বিদ্যুৎ নেই। গাজা ইলেকট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (জিইডিসিও) থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। অন্যদিকে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর গাজায় অব্যাহত বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।

জানা গেছে, ৮ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং গাজা বিদ্যুৎকেন্দ্র ১১ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল ও ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ইউএস সি-১৭ সামরিক কার্গো বিমান দিয়ে ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার বোমা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা। এছাড়া দখলদার ইসরায়েলিদের ১৫৫ মিলিমিটারের ৫৭ হাজার শেল দিয়েছে মার্কিনিরা।

ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল আরও জানিয়েছে, গাজায় দখলদার ইসরায়েলি সেনারা সবচেয়ে ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী যেসব হামলা চালিয়েছে সেগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বোমা।

বর্তমানে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে ইসরায়েল। খান ইউনিসের বাসিন্দারা জানান, প্রায় দুই মাস আগে যুদ্ধ শুরুর পর গতকাল শনিবার এখানে সবচেয়ে বেশি বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলিদের এমন অব্যাহত হামলা গাজার বাসিন্দাদের মিসরের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এতে সেখানে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে।

গাজার সীমান্ত লাগোয়া মিসরও অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজার বাসিন্দাদের মিসরের দিকে পাঠানোর চেষ্টা করছে। এর অংশ হিসেবে খান ইউনিস থেকে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সীমান্তবর্তী অঞ্চল রাফাহতে চলে যেতে বলছে। তবে মিসর জানিয়েছে, জোরপূর্বক গাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থানান্তর কখনো মেনে নেবে না তারা।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার পর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল। গাজায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাদ্য, পণ্য ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তারা।

হামাসের হামলার প্রতিরোধ নিতে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের তালিকায় ১০ হাজারের বেশি নারী ও শিশু রয়েছে। সূত্র: আল-জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *