গুজব ছড়িয়ে আবার সেই টিকা আবার গুজবকারীরাই নিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

যারা ছড়িয়েছে তারাই আবার এক দুই তিন নম্বর ডোজ পর্যন্ত নিয়েছে মূলধারার গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন-‘করোনার সময় অনেক গুজব ছড়ানো হয়েছিলো।প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও ছড়ানো হয়েছিলো। বিএনপিতো বলেই ছিলো; এই টিকা নেওয়া যাবে, এটা গরুর টিকা। আবার বলেছিলো এই টিকা ভারতের টিকা। এটা নেওয়া যাবে না। আবার কেউ কেউ এই টিকা হারাম-হালাল সেই দিকেও গিয়েছিলো। এটা কি দিয়ে বানিয়েছে; তা নিয়েও গুজব ছড়ানো হয়েছিলো। আবার যারা ছড়িয়েছে তারাই আবার এক দুই তিন নম্বর ডোজ পর্যন্ত নিয়েছে’

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের গুজব প্রতিরোধ সেল এবং ফ্যাক্টস চেকিং কমিটির সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

যারা গুজব ছড়িয়েছে তারা প্রথমে গোপনে; পরে আবার প্রকাশ্যে টিকা নিয়ে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন-পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব হয়েছে; পূজার সময়-ও হয়, এবার হয়নি, পারেনি। বিভিন্ন সময় এসব গুজব ছড়ানো হয়। তবে মূল ধারার গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানাই। সেগুলোর বিরুদ্ধে আপনারা সব সময় সোচ্চার ছিলেন, সত্যটা প্রকাশ করেছেন।

আগামী সংসদে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বাংলাদেশে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন নিতে আইন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

গুজব প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সঙ্গে সরকার আলোচনা করছে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটাও একটা বড় প্রতিবন্ধকতা। ভারত আইন করেছে, সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমের সব সার্ভিস প্রোভাইডারের সেখানে নিবন্ধিত হতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আইন করেছে, সেখানে নিবন্ধিত হতে হবে। যুক্তরাজ্য আইন করেছে, সেখানে নিবন্ধিত হতে হবে। অন্যান্য দেশে আইন করেছে। আমাদের দেশে এখনো আইনটি হয়নি।’

‘আমরা তাদের (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) সঙ্গে আলোচনা করছি, বারবার তাগাদা দিচ্ছি। এখানে অফিস করার জন্য বলছি, বাংলাদেশে আইনের নিবন্ধিত হওয়ার জন্য বলছি। তবে তাদের এখানে নিবন্ধিত হতেই হবে সেই বাধ্যবাধকতা আরোপ করা আইনটি এখনো করা হয়নি। সেটি করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এখন তো আইন করার সময় নেই। আগামী পার্লামেন্টে ইনশাআল্লাহ এ বিষয়ে আইন হবে।’

বিদেশে থেকে অনেকে গুজব ছড়াচ্ছে। এ বিষয়ে আপনারা কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশ থেকে অনেকে গুজব ছড়ায়। সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও অনেক গুজব ছড়ানো হয়েছে। উনি আমেরিকায় নেই। উনি আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসেছেন, এসে আবার আমেরিকা চলে যান। বিদেশ থেকে গুজব ছড়ানো হয়, সেটির ব্যাপারে আমরা ওয়াকিবহাল, আগের তুলনায় কমেছে। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এ গুজব ছড়ানোর জন্য বিএনপি এবং জামায়াত তাদের নিয়মিত পয়সা দেয়। পয়সা না দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বা কম দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সেই অডিও ভাইরাল হয়েছে।’

‘দেশের বিরুদ্ধে গুজব রটানোর জন্য যদি একটি রাজনৈতিক দল গুজব রটনাকারীদের পয়সা দেয় এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা তাদের চিহ্নিত করেছি যারা গুজব রটায়। এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অনেক জায়গায় তাদের ব্যাপারে নোটিফাই করা হয়েছে। কেউ যদি মনে করে বিদেশে বসে গুজব রটাবে আর ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে এখন আর সেটি কিন্তু নয়।

দেশে যারা গুজব রটিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশের মধ্য থেকে যখন কেউ গুজব রটায় তখন তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলা যদি আইসিটি অ্যাক্টে হয়, তবে সেটি পত্রিকায় ছড়ায় কেন মামলা হলো? গুজবটাতো অনলাইনেই ছড়ানো হয় বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সেটি তো ডিজিটাল মাধ্যম। ডিজিটাল মাধ্যমে গুজব ছড়ালে তো ডিজিটাল আইনেই মামলা হবে। কিন্তু সে মামলা করলে তখন আবার অনেকে বলে, কেউ কেউ চেঁচামেচি করেন কেন মামলা হলো, এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। গ্রেফতার করলে তো সেটি নিয়ে আরও বেশি কথাবার্তা হয়, সে কি করেছে সেটি তখন ঢাকা পড়ে যায়।

এছাড়া দেশে বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে দীর্ঘসূত্রিতা আছে বলে মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাবো কেউ যদি সত্যিকার অর্থে অপরাধ করে থাকে, সেটি যদি আমিও হই, সেটা যদি একজন সাংবাদিকও হয়, তার তো বিচার হতে হবে। না হলে তো এ অপরাধ কোনো দিন বন্ধ করা যাবে না, কমানো যাবে না। আইন সংশোধন করা হয়েছে, সহজী করণ করা হয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *