ঢাকা আর্চবিশপ ভবন প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূর্তি উৎসব

‘বিশ্বাস, ঐতিহ্য ও সেবার যাত্রাপথে ঢাকায় শতবর্ষী আর্চবিশপ ভবন’ শিরোনামে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালে কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও ও আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ ক্রুজের জাতীয় ও জুবিলী পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে উদ্বোধন হয় ঢাকার আর্চবিশপ হাউজের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান। ঢাকার আর্চবিশপ ভবনটি একটি ধর্মীয় প্রশাসনিক ভবন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের বিশপ ল্যগ্রাঁর সময়ে ইটের গাথুনীতে বর্তমান দু’ তলার আর্চবিশপ ভবনটি নির্মিত হয়।

গোটা ঢাকা ডায়োসিস এবং দেশে আনন্দ, শান্তি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বর্ষিত হয়ে সকলে শান্তিতে থাকুক- এ প্রত্যাশায় শান্তির প্রতীক কবুতর অবমুক্ত করা হয় শতবর্ষের এই জুবিলীতে।

অনুষ্ঠানে আর্চবিশপের পৌরহিত্যে খ্রিস্টযাগ উৎসর্গের মাধ্যমে শত বছরে সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা আর্চবিশপ ভবন ও এ ভবনে বসবাসকারীদের মাধ্যমে সমাজ ও দেশের জন্য যে মঙ্গল সাধন করেছেন তার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। ধর্মীয় সঙ্গীত, নৃত্য ও বন্দনা গীতিকায় এক স্বর্গীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয় কাকরাইল সেন্ট মেরীস ক্যাথিড্রালে।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকার আর্চবিশপ ডি’ ক্রুজ বলেন, ‘শতবর্ষের এই জয়ন্তী উৎসব আমাদের সকলের জন্যই অনেক আনন্দময় ও তাৎপর্যপূর্ণ। খ্রিস্টবিশ্বাসের যাত্রা পথে কত স্মৃতি শ্রুতি বিজড়িত এই উৎসবটি। এটি একটি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর মাহেন্দ্রক্ষণ ও প্রেরণা দানকারী শুভ মুহূর্ত যা ভবিষ্যতের জন্য দিশারী হয়ে থাকবে।’

প্রার্থনানুষ্ঠান বা খ্রিস্টযাগ শেষে শতবর্ষ পূর্তি উৎসব উপলক্ষে বিশেষ স্মরণিকা ‘শতবর্ষী’ র মোড়ক উন্মোচন করেন কার্ডিনাল, আর্চবিশপ ও অন্যান্য অতিথিবর্গ। আর্চবিশপ ভবনের ইতিহাস নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র ‘ বিশ্বাস, ঐতিহ্য ও সেবাকর্মের বাতিঘর ঢাকার আর্চবিশপ ভবন’ প্রদর্শিত হয়। বিকালে জুবিলী উত্তর দিক-নির্দেশনামূলক সহভাগিতা করেন মহামান্য কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও, সিএসসি। এরপরই ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও কৃষ্টি-সংস্কৃতি নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ঢাকার আর্চবিশপ ভবন প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূর্তি উৎসব উদযাপনে অংশ নেয় পৃথিবীর একমাত্র বাঙালি কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও, সিএসসি, বাংলাদেশে খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ, ওএমআই, বাংলাদেশে ভাটিকান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মন্সিনিয়র মারিনকো আন্তনোভিচ, ময়মনসিংহের মাননীয় সংসদ জুয়েল আরেং, সংরক্ষিত মহিলা আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মি. নির্মল রোজারিও।

অন্যান্য খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নটরডেম ও হলিক্রসের প্রিন্সিপাল, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সমবায় প্রতিষ্ঠান দি খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ এর প্রেসিডেন্ট মিঃ হেমন্ত কোড়াইয়া, দি মেট্রোপলিটান খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির লি. ও কালবের প্রেসিডেন্ট মি. আগষ্টিন পিউরিফিকেশন সারা দেশ থেকে ৩ হাজার প্রতিনিধি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *