ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্মারক ডাকটিকিট হচ্ছে সভ্যতার বাহন। স্মারক ডাকটিকিট একটি দেশ, জাতি ও সভ্যতা সম্পর্কে যে তথ্য দিতে পারে অন্যভাবে তা পাওয়া যায় না। স্মারক ডাকটিকেটের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম অতীতের জীবনধারা, সংস্কৃতি এবং ইতিহাসকে আত্মস্থ করার সুযোগ পায়। ডাকটিকেট সংগ্রহ একটা বড় শখ ও নেশা, এখন আগের মতো চিঠি চালাচালি নেই তবু অনেকের কাছেই স্মারক ডাকটিকেট সংগ্রহ এখনও বড় শখ। তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কো-কারিক্যুলাম হিসেবে বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মন্ত্রী আজ শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা ভবনের তৃতীয় তলায় শুরু হওয়া এফআইপি স্পন্সরশিপ ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাম্প প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাকা ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, মোবাইল ফোন চিঠির যুগের শেষ করলেও ডাকের দিন শেষ হয়নি। ডাকঘরকে ডিজিটাল ডাকঘরে পরিণত করার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে উল্লেখ করে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রযুক্তির বিকাশ ডাকঘরের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ । ডাকঘর আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল করতে না পারলে ডাকঘর সচল রাখতে পারব না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডাক সার্ভিসের উন্নয়নে খুবই আন্তরিক। এরই ধারাবাহিকতায় ডাকঘরকে ডিজিটাল ডাকঘরে রূপান্তর করার কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ডাকে পণ্য পাঠানোর তথ্য মুঠোফোনেই ট্রেকিং করে পাওয়া যাচ্ছে। রান্না করা খাবার ও পচনশীল পণ্য সেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ডাক সেবার ডিজিটাল রূাপন্তরে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘটনার প্রতিনিধিত্বমূলক একেকটি বিষয় নিয়ে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ডাক টিকেট প্রকাশ করেছি। একই প্রয়াস আমরা মুবিজবর্ষেও নিয়েছি। এটি আমাদের ধারাবাহিক একটি প্রয়াস। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে এক একটি ডাকটিকেট একেকটি মহাকাব্য হতে পারে। আমাদের দেশে ডাকটিকেট সংগ্রহকে আন্দোলন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই ব্যাপারে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা প্রদানে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানান তিনি।
ভারত, অস্ট্রেলিয়া, চায়না, সৌদিআরব, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, ফিজি, মালোয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও নেপাল সহ ১৭টি দেশ অংশগ্রহণ করেছে। অংশগ্রহণ কারীরা ৪০০টি ফ্রেমে দুই হাজারের বেশি শিটে লাখো স্টাম্পের প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী।
বাংলাদেশ ফিলাটেলিক ফেডারেশনের সভাপতি শরিফুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফিলাটেলিক জ্যুরি বোর্ডের সহ-সভাপতি রজার ট্যান (সিঙ্গাপুর), ট্যান চিহুই (মালোয়েশিয়া) এবং ভারতের ফিলাটেলিক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি রাজেশ কুমার বাগরি। বাংলাদেশ ফিলাটেলিক ফেডারেশনের নির্বাহী সদস্য ফয়জুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইন্ডিয়া পোস্ট এর প্রীতি আগার ওয়াল, হাম্মাদ জাফর, অস্ট্রেলয়া ফিলাটেলিক অ্যাসোসিয়েশনের ডেভিড ফিগ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে ফিজি পোস্ট থেকে দুইটি এবং অস্ট্রেলিয়া পোস্ট থেকে দুইটি করে স্যুভিনর শিট উন্মোচন করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে বিশেষ খাম ও স্বারক ক্যানসেলরসহ বেশ কিছু ডাক সামগ্রী উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
প্রদর্শনীতের চারটি দেশের জাতীয় ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে অস্থায়ী পোস্ট অফিস স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ৩০টি স্টলে বিভন্ন সংগ্রহ সামগ্রি বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পরে মন্ত্রী প্রদর্শণী ঘুরে দেখেন। এর আগে ফিতা কেটে চার দিনব্রাপী এই প্রদর্শনীর উদ্ধোধন করেন তিনি।