অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ দাবি, আটক ৩

ফাঁদ পেতে জোরপূর্বক নারীদের সাথে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মাগুরার নিজনান্দুয়ালী এলাকা থেকে দুই নারী প্রতারকসহ তিন জনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।

আজ সোমবার দুপুরে মাগুরা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ডিবি পুলিশের অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মোশারফ হোসেন, সাইবার ক্রাইম অপরাধ দমন বিভাগের উপ-পরিদর্শক (এস আই) রাকিবুল ইসলামসহ অন্যরা।

মাগুরা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ডিবি পুলিশের একটি টিম শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের মুল আসামি শাহিনুর শেখ (৪২) তার অপর দুই সহযোগী জুলেখা (৩৫) ও নদীকে (৩৫) আটক করে।

অভিযানের বিষয়ে তিনি জানান, রোববার বিকালে মাগুরা সদরের ডেফুলিয়া গ্রামের শামছু বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি তার এলাকার মিলন মিয়া নামে একজনকে নিয়ে শহরের নতুন বাজার হাটে সরিষা বিক্রি করতে আসেন। ওই হাট থেকে শামছু বিশ্বাসকে শাহিনুর শেখ কৌশলে অপহরণ করে নিজনান্দুয়ালীর জুলেখার বাড়িতে আটকে রেখে জোরপূর্বক মোবাইল ফোনে অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ধারণ করে শাহিনুর শেখ, জুলেখা ও নদী। পরে শামছু বিশ্বাসের মোবাইল ফোন থেকে তার সঙ্গে হাটে আসা মিলন মিয়ার কাছে ফোন করে বিকাশের একটি ফোন নম্বর দিয়ে এক লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবি করে অভিযুক্তরা। না হয় ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। রোববার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে মিলন মিয়াসহ শামছু বিশ্বাসের পরিবারের সদস্যরা মাগুরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অভিযোগ দেন। এরই ভিত্তিতে মাগুরার সাইবার ক্রাইম অপরাধ দমন বিভাগের সহযোগিতায় ডিবি পুলিশের একটি দল রবিবার রাতেই নিজনান্দুয়ালীতে এ অভিযান চালায় এবং জুলেখার বাড়ি থেকে শামছু বিশ্বাসকে উদ্ধারসহ অভিযুক্তদের আটক করে।

মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ জানান, অভিযুক্তরা প্রতারণার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, আসামি শাহিন ওই নারীদের দিয়ে প্রথমে মোবাইল ফোনে অপরিচিত বিভিন্ন মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে দেখা করার কথা বলে নতুন বাজার এলাকায় ডেকে এনে নিজনান্দুয়ালী এলাকার জুলেখার বাড়িতে আটকে মোবাইল ফোনে অশ্লীল ভিডিও ধারণ ও আপত্তিকর ছবি তুলে পরে অর্থ দাবি করে। এ অপকর্মে জুলেখার অন্য সহযোগী হচ্ছে নদী।

মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ আরো জানান, আসামী শাহিনের মোবাইল ফোন থেকে কয়েকজনের জোরপূর্বক অশ্লীল ভিডিও ধারণের প্রমাণ মিলেছে। এ বিষয়ে আরো তদন্ত চলমান রয়েছে। বিশেষ করে কতজন এ ধরনের প্রতরণার শিকার হয়ে প্রতারকদের অর্থ দিতে বাধ্য হয়েছেন সে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে পুলিশ। পাশপাশি জেলায় এ ধরনের আরো চক্র থাকলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে। গ্রেফতারকৃত আসামি শাহিনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে অপহরণ সংক্রান্ত ২টি মামলাসহ একাধিক মাদক ও চুরির মামলা রয়েছে। বর্তমান ঘটনায় মাগুরা সদর থানায় মামলা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *