ডেস্ক রিপোর্টঃ সময়ের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সমানতালে সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরাও। ঘরে কিংবা বাইরে নারীদের আজ সফল পদচারণার পাশাপাশি হয়েছে নতুন জাগরণ। নারীরা এখন পৃথিবীর বিশাল কর্মযজ্ঞের অংশবিশেষ। এমনই এক সাহসী নারী দিলরুবা আক্তার মিলি। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী বনরক্ষী। তার স্বপ্ন বনরক্ষী কর্মকর্তা হিসেবে নিজের পথ আরও সুগম করে এগিয়ে যাওয়া
প্রকৃতি ও বনপ্রেমী দিলরুবা আক্তার তার পথ পাড়ি দেওয়ার কথা শুরু করেন বিদ্যালয়জীবন থেকে। তিনি বলেন, ‘কাউখালী মহাবিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে উদ্যোগ নিই বনরক্ষী হওয়ার। বনজঙ্গল নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা থেকে এ কাজে আসি। প্রথম দিকে কীভাবে কী করব, শুরু কোথায় করব ইত্যাদি দ্বিধায় ভুগছিলাম। কেননা যে কোনো কিছুর নতুন উদ্যোগ নেওয়া একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। কিন্তু আমার পরিবার, আপনজনের সহযোগিতা ও বাবার হাত ধরেই এগিয়ে চলা আমার। আমি বরিশালের পিরোজপুর জেলার মেয়ে। এখান থেকে পড়াশোনা শেষ করি। ‘
তিনি আরও বলেন, পিরোজপুর থেকে পড়াশুনা শেষে বনরক্ষী হিসেবে পরীক্ষা, ভাইভা শেষ করে ট্রেনিং নিই রাজশাহী পুলিশ একাডেমি থেকে। তবে পরীক্ষা ও ট্রেনিং নেওয়ার সময় বেশকিছু প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়ি। এ পেশায় নারীসংখ্যা শূন্যের দিকে। ফলে বেশ প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয় আমাকে। আমাদের ট্রেনিংয়ের আগে ভাইভা দিতে হয়। ওই সময় ২০৩ পুরুষের মধ্যে একমাত্র আমি নারী হিসেবে যোগ দিই। সেখানে পরীক্ষা ও ভাইভায় উপস্থিত হতে প্রথমে সমস্যা হলেও পরে তা মোকাবিলা করে এগিয়ে যাই। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকজনের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে নানা চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে থাকি। এর পর ঢাকায় বনরক্ষী হিসেবে ২০১৬ সালে যোগ দিই। তখন থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বনরক্ষী হিসেবে কর্মরত আছি।’
জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান হলো ফুল ও উদ্ভিদের একটি মিউজিয়াম। এখানে আপনি দেখতে পাবেন নানা ধরনের প্রজাতির গাছ ও ফুল। ফলে প্রতিনিয়ত এই স্থানের দেখাশোনা করা, ছোট-বড় সব মানুষকে বন ও উদ্ভিদ সম্পর্কে জানানোর মাধ্যমে ছোট ভ্রমণ করানোর কাজ করে থাকি। শুরুর দিকে যখন চাকরি করতে ঢাকায় আসি, তখন থাকা-খাওয়াসহ নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলাসহ নানা প্রতিকূলতা ছিল বটে তবে যত দিন যাচ্ছিল- তত আত্মবিশ্বাসী হতে থাকি। আবার প্রথম ও একা নারী হিসেবে এ পেশায় কাজ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং বিষয়। তাই সাহসী হওয়া খুব জরুরি ছিল আমার জন্য। তাই দিনের সঙ্গে বাড়তে থাকে আমার কাজের গতি ও আস্থা।