উৎপল দত্ত: কুকুরের মড়ক শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে এবং আরও কয়েকটি জেলায়। গত তিন দিনে ২০০ এরও বেশি পথের কুকুরের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার একই এলাকায় ৬০টি কুকুরের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ৯৭টি কুকুরের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার আরও ৪৫টি কুকুরের মৃত্যু হয়েছে। করোনা আতঙ্কের মধ্যে এত কুকুরের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। কুকুর মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিষ্ণুপুর পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কুকুরগুলোর ময়নাতদন্ত করা হলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পশু চিকিৎসকদের একাংশের মতে ভাইরাল ইনফেকশনের জন্যই কুকুরগুলোর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিধায়ক এবং একজন পশু অধিকার সংরক্ষক।
দেবশ্রী রায় তার উদ্বেগের কথা জানান। ময়নাতদন্ত করার ওপর জোর দেন দেবশ্রী। দেবশ্রী রায় মনে করেন পার্ভোতে আক্রান্ত হয়েই সম্ভবত কুকুরগুলোর মৃত্যু হয়েছে। পার্ভো একটি ছোঁয়াচে রোগ। বিশেষজ্ঞেরা জানান, ক্যানাইন পার্ভো ভাইরাস বা সিপিভি সংক্রমিত কুকুরের মল কিংবা বমি অন্য কুকুর শুঁকে নিলে সে-ও সংক্রমিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭০ সালের শেষের দিকে পার্ভোর সংক্রমণ নজরে আসে।
এই সংক্রমণ কুকুরের মধ্যেই ছড়ায়। মানবদেহে ছড়ায় না। এটা ডিসটেম্পার রোগ নয়, দেবশ্রী তার মতামত জানান। ক্যানাইন ডিসটেম্পারও একটি ভাইরাসঘটিত রোগ। ডিসটেম্পার হলে কুকুরগুলো আগে রোগে ভুগতো তারপর মরে যেত। এক্ষেত্রে সেটা হয়নি।
‘অ্যানিমেল রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট’ দফতরের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন দেবশ্রী। অভিনেত্রী অনুরোধ করেন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখতে। কুকুর মরেছে বলে আরও কুকুরকে মরতে দিতে হবে এটা ঠিক নয়, দেবশ্রী সবাইকে অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, বাঁকুড়ার পাশাপাশি হুগলিতেও কুকুরদের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ছে।
অজানা ভাইরাসের আক্রমণে বিষ্ণুপুরে প্রতিদিনই কুকুরের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত আটদিনে মৃত্যুর সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে, বর্তমান পত্রিকার প্রকাশ। করোনোর ভয় কিছুটা ফিকে হলেও কুকুরের মড়ক নিয়ে নাগরিকদের মনে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
সূত্র: এই সময় ডটকম, বর্তমান পত্রিকা, কলকাতা টুয়েন্টিফোর