উৎপল দত্ত: অ্যালিসা কারসন এর বয়স এখন ২০। নভোচারী হতে নাসাতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে সে। ২০৩৩ সালে নাসা তাকে মঙ্গল গ্রহে পাঠাবে। সবকিছু ঠিক থাকলে কোন রোবট নয়, অ্যালিসা কারসন হবে রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ যে মঙ্গল গ্রহে প্রথম পা রাখবে। পোড়ামাটির রঙের মতো মঙ্গল গ্রহে অ্যালিসা দুই থেকে তিন বছর সময় কাটাবে। সেখানে তার কাজ প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজা, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা ও খাদ্য উৎপাদন।
সাংবাদিক অ্যালিসন ক্রগার অ্যালিসা কারসনের সাক্ষাৎকারটি নেন ২০১৮ সালে। তখন তার বয়স ছিলো ১৭।
অনেক ঘটনা যা শুধু মুভিতে দেখা যায়, সত্যিকার অর্থে তা বাস্তবে ঘটতে চলেছে, অ্যালিসা কারসন তার এই অনুভূতির কথা সাংবাদিককে জানায়। মঙ্গল সফরের জন্য নিজের সমগ্র জীবনকে উৎসর্গ করতে চায় অ্যালিসা।
মহাকাশ নিয়ে তার আকাঙ্ক্ষা অবসেশনের মতো। মাত্র তিন বছর বয়সেই তার এই অদম্য আকাঙ্ক্ষা জাগে। ওই বয়সে ‘দ্য ব্যাকইয়ার্ডিগানস’ নামে একটি কার্টুন সিরিজ দেখেছিল সে। কাল্পনিক কার্টুন সিরিজে পাঁচটি প্রাণীর একটি দলকে তাদের আঙ্গিনায় কাল্পনিক ও দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ড করতে দেখেছিল। কার্টুন সিরিজের একটি পর্ব ছিলো মঙ্গল গ্রহে মিশনের কাল্পনিক কাহিনি নিয়ে।
‘আমার মনে হলো, এই লাল গ্রহটি খুব সুন্দর। আমি মঙ্গল গ্রহে অবতরণের ভিডিও-গুলো দেখতে শুরু করলাম। আমার রুমে মঙ্গলের বিশাল একটি ম্যাপ আছে, যার দিকে আমি তাকিয়ে থাকতাম। তারপর টেলিস্কোপের সন্ধান শুরু করি যাতে মহাকাশ দেখতে পারি।’এসব কথাই এক সাক্ষাৎকারে অ্যালিসা কারসন সাংবাদিক অ্যালিসন ক্রগারকে জানায়।
মাত্র ১২ বছর বয়সে নাসা স্পেস ক্যাম্পের তিনটিতে যোগ দেয় অ্যালিসা। ইতিহাসে এই নজিরবিহীন কাজটি একমাত্র অ্যালিসা করে।
মানুষ কীভাবে মহাকাশে অভিযান চালিয়েছে, এই মৌলিক ধারণাটি সর্বপ্রথম অর্জনের চেষ্টা করেছিল অ্যালিসা।
নাসার নিয়ম অনুযায়ী ১৮ বছরের আগে কেউ নভোচারী হওয়ার আবেদন করতে পারে না। কিন্তু অ্যালিসার ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম দেখা যায়। নাসা নিশ্চিত অ্যালিসার প্রবল সম্ভাবনা আছে, এই সম্ভাবনাকে তারা এখন সময়ের সাথে যাচাই করে দেখছে।
নাসা অ্যালিসাকে নিয়ে নিশ্চিত, মঙ্গলে অবতরণের জন্য তাদের কাছে একজন ‘পারফেক্ট’ প্রার্থী রয়েছে।
২০৩৩ সালে মঙ্গলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে অ্যালিসা কারসন। তখন অ্যালিসা কারসনের বয়স হবে ৩২, যা একজন নভোচারীর জন্য আদর্শ বয়স। সব ঠিকঠাক মতো ঘটলে অ্যালিসা কারসন পৃথিবী থেকে প্রথম পা রাখবে মঙ্গল গ্রহে।
মঙ্গলে প্রথম মানুষ। প্রথম নারী।