ডেস্ক রিপোর্ট: নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল কাদের মির্জাকে বহিষ্কারের সুপারিশ এবং সংগঠনের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই বিষয়ে দুই রকম বক্তব্য দিয়েছেন।
শনিবার বিকেলে কাদের মির্জাকে সংগঠনের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত জানানোর দুই ঘণ্টা পরই তা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। সেসময় এবিষয়ে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম বলেন, অনিবার্য কারণবসত এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে।
এরপর রাত ৯টা ২৭ মিনিটে ফেসবুক লাইভে এসে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম ভাই ঢাকা থেকে এসে বললেন, মির্জার বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। সে অনুযায়ী আমরা তাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। কিন্তু এখন আবার সেলিম ভাই তার অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ালেন। এখন তো তিনিও নীতিহীন হয়ে গেলেন। কাদের মির্জার অব্যাহতি বহাল রয়েছে। এ রকম লোককে দলে রাখা উচিত নয়।
তিনি বলেন, একজন লোক অপরাধী। মির্জা কাদের শুধু নোয়াখালী নয়, সারাদেশের আওয়ামী লীগকে ছোট করেছে- তাকে তো ছাড়া যায় না। তার বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিয়েছি।
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এইএইচএম খায়রুল আনম সেলিম চৌধুরী বলেন, মির্জা কাদের আওয়ামী লীগের কোনো বড় পদে নেই। উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তিনি। তবে প্রত্যাহার ও বহিষ্কারের সুপারিশের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রথমে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে দলীয় শান্তি বজায় রাখতে আমি সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছি।
তিনি বলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আপাতত আমি পরিস্থিতি দেখতে চাচ্ছি। পুরো বিষয়টি কেন্দ্রের ওপর ছেড়ে দিতে চাচ্ছি।
উল্লেখ্য, শনিবার বিকাল ৪টার দিকে দলীয় প্যাডে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আবদুল কাদের মির্জাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ ও সংগঠনের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়।
অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ কর হয়, গত কয়েক মাস থেকে আবদুল কাদের মির্জা দলীয় নেতা ও কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে তাদের গুরুতর আহত করায় এবং আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি ও জেলার নেতাদের সর্ম্পকে মিথ্যা ও অশালীন বক্তব্য দিচ্ছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সভা সমাবেশে আপত্তিকর মন্তব্য এবং ফেসবুক লাইভে এসে সংগঠনবিরোধী বক্তব্য, মন্তব্য করায় এবং নেতাকর্মীদের হুমকি দেওয়া তাকে সংগঠনের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সংগঠনবিরোধী ও দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকায় আবদুল কাদের মির্জাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কারের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কার্যনির্বাহী সংসদের সংসদ বরাবর সুপারিশ করা হয়েছে।
সেসময় এ ব্যাপারে আবদুল কাদের মির্জা জানান, জেলা আওয়ামী লীগের কোন কমিটি নাই। এদের সঙ্গে আমার কোন সংপৃক্ততা নেই। এই অবৈধ কমিটির কোন অস্তিত্ব নেই। এ কমিটি আমাকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা রাখে না।