কোম্পানীগঞ্জে আ.লীগের দুপক্ষে সংঘর্ষ, সাতজন গুলিবিদ্ধ

কোম্পানীগঞ্জে আ.লীগের দুপক্ষে সংঘর্ষ, সাতজন গুলিবিদ্ধ

ডেস্ক রিপোর্ট: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের চাপরাশিরহাট বাজারে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত দুই দফা সংঘর্ষ হয়। এতে সাতজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজন সাংবাদিকও আছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এখন এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

সংঘর্ষের পর ফেসবুক লাইভে এসে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ করেছেন, চাপরাশিরহাটে তার লোকজনের ওপর সাংসদ একরাম চৌধুরী ও সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর লোকজন পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছেন। এ সময় তিনি দাবি করেন, হামলায় তার পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের দুপক্ষে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত একজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল তার চাপরাশিরহাট-সংলগ্ন বাড়িতে দলীয় কর্মীদের নিয়ে সভা করেন। বিকেল পাঁচটার দিকে সভা শেষে মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল চাপরাশিরহাট বাজারের দিকে যায়। মিছিলটি বাজারের মাঝামাঝি যাওয়া মাত্র সেখানে অবস্থানকারী কাদের মির্জার অনুসারী চরফকিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে দলীয় নেতা-কর্মীরা বাধা দেন এবং হামলা চালান। এ সময় উভয় পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুই পক্ষকে দুই দিকে ধাওয়া করে এবং ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে দুটি মাইক্রোবাস ও শতাধিক মোটরসাইকেলযোগে তার অনুসারীরা চাপরাশিরহাট বাজার-সংলগ্ন মিজানুর রহমানের বাড়িতে হামলা চালান। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দুই দফা হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সাতজন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। এসময় বোরহান উদ্দিন ওরফে মোজাক্কির নামে একজন সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ‘বাংলাদেশ সমাচার’ পত্রিকার কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি। এ ছাড়া আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মো. ফরহাদ, আবদুল অমিত, মো. কাঞ্চনের নাম জানা গেছে।

সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান অভিযোগ করেছেন, তিনি দলীয় কর্মীদের নিয়ে শনিবারের একটি কর্মসূচির বিষয়ে বাড়িতে মতবিনিময় সভা করেন। সভা শেষে চাপরাশিরহাট বাজারে মিছিল নিয়ে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান জামালের নেতৃত্বে প্রথম হামলা হয়। এরপর দ্বিতীয়বার কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে তার অনুসারী বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন মিজানুর রহমান।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক বলেন, মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে মিছিল চলাকালে চাপরাশিরহাটে ইউপি চেয়ারম্যান জামালের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি হয়েছে। এরপর কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার কিছু অনুসারী চাপরাশিরহাট বাজারে এলে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *