লাইফস্টাইল ডেস্কঃ ইভনিং প্রিমরোজ অয়েল(ইপিও)-এ রয়েছে দুটি উচ্চ মানের ওমেগা–৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। লিনোলিক অ্যাসিড ও গামা লিনোলেনিক অ্যাসিড। ভিনদেশি বনফুল। জন্মে সুদূর উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার গহিন বনে। সন্ধ্যার পর ফোটে দেখে উজ্জ্বল এই হলুদ ফুলের এমন নাম। স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যচর্চায় প্রাচীনকাল থেকে এর ব্যবহার হয়ে আসছে।
লিনোলিক অ্যাসিড একটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। এটি ব্রণকে প্রশমিত ও প্রতিরোধ করে এবং একজিমা বা অন্য কোনো চর্মরোগ নিরাময় করে। এ ছাড়া এই অ্যাসিড ত্বকের কোমলতা ও স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে, যা বয়সের ছাপ দূরে রাখতে সহায়তা করে।
গামা লিনোলেনিক অ্যাসিডও বেশ শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, যা ত্বকের ব্রণ, সোরাইসিস, রোজেশিয়ার মতো মারাত্মক রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা রাখে। পাশাপাশি এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। এতে আছে অলেয়িক অ্যাসিডস নামের ওমেগা–৯ ফ্যাটি অ্যাসিড। এটিও ত্বকের রুক্ষতা দূর করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে। আর আছে স্টেয়ারিক অ্যাসিড, যা একটি পরিষ্কারক উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি ত্বক থেকে ময়লা, ঘাম ও অতিরিক্ত সিবাম দূর করে।
অতিরিক্ত ব্রণ ও কিছু চর্মরোগের সমস্যা নিরাময়ের জন্য ডারমাটোলজিস্টরা ইপিও সাপ্লিমেন্ট প্রেস্ক্রাইব করে থাকেন। অনেক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের প্রধান উপাদান হিসেবে একে দেখা যায়; বিশেষ করে অ্যান্টি-এজিং প্রোডাক্টগুলোয়।
দেশেই বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি এর সাপ্লিমেন্ট উৎপাদন করে, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। তবে ত্বকের সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইপিও সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যাবে না মোটেও।
এটি সরাসরি বা কোনো কিছুর সঙ্গে মিশিয়ে মুখে বা চুলে লাগানো যেতে পারে। ত্বকের সমস্যা সমাধানে এটি দিয়ে ঘরেই বানাতে পারেন সিরাম, ফেসিয়াল বা হেয়ার অয়েল।
নিয়মিত ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত স্মার্টফোন, কম্পিউটার স্ক্রিনের ব্যবহারের জন্য চোখের নিচে দেখা দেয় ডার্ক সার্কেল, যা নিয়ে আমরা অনেকেই চিন্তিত থাকি। এটি তাড়াতে বানিয়ে নিতে পারেন ইপিও সিরাম। ১ চামচ নারকেল তেল, ১টি ইপিও ক্যাপসুল, ১টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মেশালেই তৈরি অ্যান্টিডার্ক সার্কেল সিরাম। চাইলেই বেশি করে বানিয়ে সংরক্ষণ করতে পারেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই চোখের নিচে এবং ওপরের পাতায় অনামিকার সাহায্যে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুন। এতে ডার্ক সার্কেল কমার পাশাপাশি চোখের নিচের বলিরেখাও কমবে। তবে ভালো ফল পেতে অবশ্যই রাতে কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে।
ত্বকের মতো চুলের সমস্যা সমাধানেও বেশ কার্যকর। অতিরিক্ত চুল পড়া কমাতে সমপরিমাণ নারকেল বা জলপাই তেলের সঙ্গে ইপিও মেশান। ৪৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করলেই চুল পড়া কমে আসবে উল্লেখযোগ্য হারে। আর মাথার তালুর আর্দ্রতা ধরে রাখতে শুধু ইপিও লাগালেই চলবে।
সতর্কতা
অন্তঃসত্ত্বা, প্রসূতি মা, যাঁদের হরমোন সেনসিটিভ ক্যানসার, যেমন: ব্রেস্ট বা ওভারিয়ান ক্যানসার আছে বা ছিল এবং এপিলেপসি, সিজোফ্রেনিয়ার রোগীদের ইপিও কোনোভাবেই ব্যবহার করা যাবে না।