• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৬ অপরাহ্ন
Notice
We are Updating Our Website

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে সু চি ও রাষ্ট্রপতি আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে সু চি ও রাষ্ট্রপতি আটক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি এবং রাষ্ট্রপতি উইন মিনতকে আটক করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এর ধারাবাহিকতায় রাজধানী নেপিদো এবং ইয়াঙ্গুনের রাজপথে সেনাটহল চলছে।

সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সেনাবাহিনীর অভিযানে তাদের আটক করা হয়। দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকেও আটক করা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র মায়ো নিউনত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, অং সান সু চি, রাষ্ট্রপতি উইন মিনত এবং অন্য শীর্ষ নেতাদের সোমবার ভোরে আটক করা হয়েছে। জনগণকে উত্তেজিত না হয়ে আইন অনুসারে প্রতিক্রিয়া দেখানোর আহ্বান জানান তিনি।

এছাড়া মিয়ানমারের সংসদের নিম্নকক্ষের নবনির্বাচিত সদস্যদের সোমবার প্রথমবার মিলিত হওয়ার কথা থাকলেও অধিবেশন স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী।

গত নভেম্বরে নির্বাচনে অং সান সু চির এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও দেশটির সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে।

গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল এনএলডি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। তবে ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে দেশটির সেনাবাহিনী। এমনকি দু’দিন আগেও সেনাসমর্থকরা ইঙ্গাগুনে মিছিল করে। এবার সেই অভিযোগেই অভিযান চালিয়ে সু চিসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের আটক করা হল।

ওই নির্বাচনে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের ভোটারদের ভোট বঞ্চিত করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী থেকে সমালোচনা করা হয়। আর সেনাবাহিনী সমর্থিত বিরোধী জোট নির্বাচনে দাবি করে নির্বাচনে ৮.৬ মিলিয়ন ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।

গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতারণার’ অভিযোগ নিয়ে মিয়ানমারে যে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান না হলে ‘ব্যবস্থা নেওয়ার’ পরিকল্পনা আছে তাদের।

এটি কি অভ্যুত্থান হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ‘সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না’ বলে মন্তব্য করলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।

এরপর গত শুক্রবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও মিয়ানমারে অবস্থিত পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাস দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে সেনা হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানায়। যদিও পরের দিনই দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে অভ্যুত্থানের আশঙ্কা নাকচ করে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সংবিধান মেনে আইন অনুযায়ী কাজ করবে।

গত বছর ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বড় জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬টি আসন। সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। দাবি মানা না হলে সেনাবাহিনী ফের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেয় তারা।

২০১১ সাল পর্যন্ত সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণেই ছিল মিয়ানমার। প্রায় ১৫ বছর গৃহবন্দী জীবন কাটিয়েছেন সু চি।

মিয়ানমারে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তালিকা চূড়ান্ত করতে যখন মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের আলোচনা চলছিল ঠিক তখনই সেখানে এমন এক রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হলো।


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরও খবর