• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন
Notice
We are Updating Our Website

নদীর তীরে নয়নাভিরাম সবুজের সমারোহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২১
নদীর তীরে নয়নাভিরাম সবুজের সমারোহ - ২

নদীর ধারেই পথ, পথ ফুরালেই গ্রামের পর গ্রাম তবু সবুজ ফুরায় না। ডানে সবুজ বায়ে সবুজ সামনে পিছেও তাই সবুজ শ্যামল ছায়ায় ঘেরা দেশটা। সবুজ মাঠ সবুজ বন সবুজ পাহাড় সবুজ ছায়া, সবুজ মায়া সবুজ এই বাংলাদেশ।

তেমনি নয়নাভিরাম সবুজের সমারোহ ঝালকাঠির রাজাপুরের খননকৃত ধানসিঁড়ি নদীর দুই তীরে। উর্বর পলি মাটিতে বিভিন্ন জাতের সবুজ ফসল হাতছানি দিচ্ছে সবুজ বিপ্লবের। বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলতানে মুখরিত এই নদীর দুই তীর। রাতে ডুমুর গাছে জোনাকি পোকার জ্বলজ্বল আলোতে নদীর দুই তীর আলোকিত হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্টদের একটু নজরে এলেই দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হতে পারে রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার নদী ধানসিঁড়ি। নদী, পানির কুলকুল শব্দ, সবুজ, পাখপাখালির কলতান ও বাহারি সবুজ রঙের বিভিন্ন ফসল অনেক ভালো লাগার একটি অপরুপ দৃশ্য।

নদীর দুই তীরের খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য গাছের একটা অংশ পরিষ্কার করে কেটে বাঁশের কঞ্চির খিল লাগিয়ে হাঁড়ি ঝুলিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় গাছিরা। এই খিলে বসে পাখিদের খেজুর গাছের রস খাওয়ার দৃশ্য অসাধারণ। পাখির কিচিরমিচির সুরেলা ডাকে মন হারিয়ে যায় অচেনা দেশে।

বন বিভাগ জানান, নদীর ১২ কিলোমিটর তীরজুড়ে ঝালকাঠি সদর ও রাজাপুর উপজেলা বন বিভাগ সারিবদ্ধভাবে রোপণ করেছে রেইনট্রি, মেহগনি, আকাশমনি, শিশু, জারুল, বকাইন, কাঠ বাদাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, জাম্বুরা, আমলকী, বহেরা, অর্জুন, অরহর, ডুমুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।

উর্বর পলি মাটির যাদুতে মনের আনন্দে যা-ই চাষ করা হচ্ছে, তা-ই ফলছে। দীর্ঘ সাত কিলোমিটার নদীর ২ তীর জুড়ে প্রায় ১২টি গ্রামের ৪ শতাধিক কৃষক বিভিন্ন প্রকার কৃষি চাষ করেছেন। কৃষকরা নিজেদের চহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট কৃষি ফসল উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে চড়া মূল্যে বিক্রি করে অধিক মুনাফা পেয়ে বেশ খুশি।

উপজেলা বন বিভাগ ও স্থানীয় কৃষকরা বিভিন্ন সবুজ গাছপালা ও ফসলের চাষ করায় পুরো নদীই সবুজের আবর্তে ডুবে আছে। উর্বর মাটিতে আর্থিক মুনাফা লাভের আশায় কৃষকরা চাষ করেছেন আলু, সরিষা, টমেটো, শিম, লাউ, কুমড়া, মুগডাল, লালশাক, মুলা, সুস্বাদু ক্ষীরা ইত্যাদি।

পিংরি গ্রামের কৃষক আকব্বর মৃধা জানান, ধানসিঁড়ি নদী তীরে তার প্রায় ৪০ শতাংশ জমি রয়েছে। এতে শালগম, পেঁপে, ধনিয়া, লালশাক, মুলা, লাউ ও মিষ্টি কুমড়াসহ একাধিক ফসল চাষ করেছেন। ৪০ শতাংশ জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় দশ হাজার টাকা। তাতে যে ফসল হয়েছে তা দিয়ে নিজের চাহিদা মেটানোর পর ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা পাবেন বলে তিনি আশা করছেন।

রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ ধানসিঁড়ি নদী নিয়ে তার কবিতায় লিখেছিলেন, আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে- এই বাংলায় হয়তো মানুষ নয়- হয়তো বা শংখচিল শালিখের বেশে। এ কবিতাটির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে এ ধানসিঁড়ি নদীটি ব্যাপক আলোচিত।

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, প্রধানমন্ত্রীর ডেলটা প্লান অনুযায়ী ৬৪ জেলায় ছোট নদী খাল খনন প্রকল্পের আওতায় রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের ঝালকাঠির ধানসিঁড়ি নদীটি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ২ বছর মেয়াদে দুই কিস্তিতে সাড়ে ৮ কিলোমিটার পুনঃখননের জন্য প্রায় ৪ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরও খবর