ডেস্ক রিপোর্ট: ইমরান নামে এক পুলিশ সদস্যকে মারপিট ও অপহরণ চেষ্টার অভিযোগে গতকাল সোমবার যশোর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপুসহ চারজনকে আটক করেছিল পুলিশ। ১৮ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে থানা থেকে ছাড়া পান মাহমুদ হাসান বিপু।
যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, সোমবার রাতে পুলিশ লাইন্সে কর্মরত কনস্টেবল ইমরান সাদা পোশাকে পুরাতন কসবা এলাকার শহীদ মিনারে বসে এক নারীর সাথে গল্প করছিলেন। এ সময় ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতাকর্মী সেখানে গিয়ে নারীর সাথে গল্প করতে দেখে তার ওপর চড়াও হন। নিজের পরিচয় দিয়ে ও পরিচয়পত্র দেখিয়ে পুলিশ কনস্টেবল ইমরান প্রতিবাদ করেন। এসময় তারা তাকে শহীদ মিনার থেকে ধরে পাশের আবু নাসের ক্লাবে নিয়ে যায়। সেখানে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু উপস্থিত ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিপুসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, পুলিশ সদস্যকে মারপিট করে তারা আইন ভঙ্গ করেছেন। যারা ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ হাসান বিপুকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে যশোর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা অভিযোগ করেছেন, এই ঘটনার জেরে পুলিশ আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক বলেন, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের একাধিক টিম গভীর রাতে তার বাড়ি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদ শাহিন চাকলাদার এমপির প্রেসসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায়, যা সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, উপশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসানুর রহমান লিটু ও যুবলীগের সদস্য মুনসুর আলম জানান, সোমবার রাত ২টার দিকে পুলিশ তাদেরসহ ৫/৬ জন নেতার বাড়িতে গিয়ে গালিগালাজ ও সামনের অংশ ভাংচুর করেছে। এসময় পুলিশ বাড়ির সামনের সিসি ক্যামেরাও ভাংচুর করে।
তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে ভাংচুরের অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে পুলিশ সুপার বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হবে।
এদিকে ওই নেতাদের মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকালে নয়টা থেকে কেশবপুর শহরে যশোর-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমিনের নেতৃত্ব দুই ঘণ্টা ব্যস্ততম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। এতে সড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় থানা থেকে বিপু ছাড়া পাওয়ার পর তাকে নিয়ে নেতাকর্মীরা শহরে বিক্ষোভ করেন। পরে তারা দলীয় কার্যালয়ে যান।