ডেস্ক রিপোর্ট: জনসাধারণের জন্য মহাকাশ পর্যবেক্ষণের সুযোগ করে দেওয়ার পাশাপাশি মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চায় আগ্রহীদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা করে দিতে একটি ‘মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র’ স্থাপন করা হচ্ছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী জানান, আগামী ১৯ জানুয়ারি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র’ স্থাপন প্রকল্পটি অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। একনেকে অনুমোদনের পর ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
সূত্র জানায়, পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টন করে রাখা বিষুব রেখা, কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত চারটি দ্রাঘিমা রেখার সংযোগস্থল মোট ১২টি। তাত্ত্বিকভাবে বলা হয়ে থাকে, মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য এই স্থানগুলো আদর্শ। তবে এই ১২টি ছেদবিন্দুর ১০টিই অবস্থিত বিভিন্ন সাগর-মহাসাগরে। স্থলভাগের মাত্র দুইটি ছেদবিন্দুর একটি সাহারা মরুভূমিতে, অন্যটি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ভাঙ্গারদিয়া গ্রামে।
এখানে একটি মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র স্থাপন করলে টেলিস্কোপে বাংলাদেশ থেকেই মহাকাশ পর্যবেক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ভাঙ্গায় জমি অধিগ্রহণ, অফিস ভবন, অবজারভেটরি টাওয়ার, অফিসার্স কোয়ার্টার, সার্ভিস ভবন এবং পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনের কাজ করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা বলেন, প্রকল্পটির প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি গবেষণা ও প্রয়োগধর্মী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান মহাকাশ বিজ্ঞান ও দূর অনুধাবন প্রযুক্তি, বন ও পরিবেশ, কৃষি মৎস্য, ভূ-তত্ত্ব, মানচিত্র অংকন, পানিসম্পদ, ভূমি ব্যবহার, আবহাওয়া, ভূগোল, সমুদ্র বিজ্ঞান ইত্যাদি ক্ষেত্রে গবেষণা কাজে নিয়োজিত। এছাড়া কেন্দ্রটি একটি শিক্ষা সহায়ক বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে। যার সুবিধা পেতে শুধু বাংলাদেশি নয়, বিদেশি পর্যটকদেরও আগমন ঘটবে।