ডেস্ক রিপোর্ট: অল্প খরচে কৃষিপণ্য পরিবহনে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক লাগেজ ভ্যান। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বৃহৎ নগরগুলোতে ‘লাগেজ ভ্যান’ এর মাধ্যমে পৌঁছানো সহজ হবে। এর মধ্যে ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ। পণ্য ভেদে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেরও পরিকল্পনা থাকছে লাগেজে। লাগেজ ভ্যান চালু হলে কৃষকরা স্বল্প সময়ে অল্প খরচে তাদের উৎপাদিত দ্রব্য সহজে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে বাজারজাত করে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। দেশের শহরগুলোতে টাটকা কৃষিপণ্য সহজে পৌঁছানো যাবে। রেলওয়েতে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে, যা দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলার উথলী রেলস্টেশন সংলগ্ন মাঠে অংশীজন সভায় এ তথ্য জানান বাংলাদেশ রেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শামছুজ্জামান।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ৪১টি মিটারগেজ ও ১০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান রয়েছে। এর বেশির ভাগই আয়ুষ্কাল পেরিয়ে গেছে। তাই এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ের রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নতুন করে অত্যাধুনিক ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান সংযোজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সে অনুযায়ী গত বছরের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ রেলওয়ে ও গণচীনের যৌথ কোম্পানি CNTIC-RAILTECO-JINXI এর মধ্যে ওই লাগেজ ভ্যান সংগ্রহের দুটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আগামী ২০২২ সালের জুলাই থেকে এ সব লাগেজ ভ্যান বাংলাদেশে পৌঁছানো শুরু হবে।
তিনি আরও জানান, মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের ৩০টি ও ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের ৩০টি সবুজ শাক সবজিসহ মৌসুমি ফল ও ফুল পরিবহণের জন্য ব্যবহার করা হবে। এছাড়া মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের ১৬টি ও ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের ১২টি পচনশীল দ্রব্য (মাছ, মাংস, দুধ) পরিবহণের জন্য ব্যবহার করা হবে। এতে কৃষকরা অল্প খরচে তাদের কৃষিপণ্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহণ করতে পারবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহী এবং পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগর টগর।
এমপি আলী আজগর টগর বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় অনেক শাক সবজি ও ফলমূল উৎপাদন হয়। কৃষকরা খুব অল্প খরচে কম সময়ে তাদের উৎপাদিত পণ্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করতে পারবেন। এখন যমুনা সেতু হয়ে এসব কৃষি পণ্য পরিবহণ করা হচ্ছে। কিন্তু পদ্মা সেতু পুরোপুরি চালু হলে এ অঞ্চলের কৃষি পণ্য ওই সেতু দিয়েই খুব কম সময়ে রাজধানীতে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমলসহ রেলওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।