গর্ভধারণে দম্পতিদের দেড় লাখ টাকা দিবে সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জন্মহার হ্রাসের রেকর্ডের পর দম্পতিদের সন্তান নিতে উৎসাহিত করতে আর্থিক প্রণোদনা চালুর ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। গত বছর দেশটিতে দুই লাখ ৭৫ হাজার ৮০০ শিশুর জন্ম হয়, যা ২০১৯ সালের জন্মহারের তুলনায় ১০ শতাংশ কম। কিন্তু মারা গেছে প্রায় তিন লাখ সাত হাজার ৬৪ জন।

দেশটির স্বরাষ্ট্র ও সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সর্বশেষ আদমশুমারির পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত জনসংখ্যা ছিল ৫ কোটি ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ২৩ জন। যা ২০১৯ সালের থেকে ২০ হাজার ৮৩৮ জন কম। আগের দশ বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। যদিও বৃদ্ধির হার ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পেয়েছিল। ২০১০ সালের ১.৪৯ শতাংশ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মাত্র ০.০৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এই পরিসংখ্যানের পর দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জাতীয় নীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনার অনুরোধ করা হয়েছে। জনসংখ্যার ক্রমান্বয়ে হ্রাস দেশটির ওপর ভয়াবহ চাপ তৈরি করেছে। তরুণ জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় দেশটিতে শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যা প্রভাব ফেলেছে দেশটির অর্থনীতিতে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা দিনের বেশির ভাগ সময় অফিসেই কাটান। কিন্তু সরকার চাচ্ছে দেশে জন্মহার বাড়ুক। তাই দেশটি অফিস সময় কমানোর একটি বিল পার্লামেন্টে পাস করেছে এবং তা কার্যকর করেছে।

বিলে বলা হয়েছে ৬৮ ঘণ্টার জায়গায় এখন সপ্তাহে ৫২ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। ফলে দিনে গড়ে দুই ঘণ্টা অফিসে কম সময় দিতে হবে। দেশটির নেতারা বলছেন, কর্মঘণ্টা কমানোর ফলে পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটাবেন নারী ও পুরুষরা। স্বাস্থ্যের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া, অবসাদ কাটানো ও জন্মহার বাড়ানোর জন্য নতুন এ নিয়ম জারি করেছিল দেশটি। কিন্তু তাতেও কোনো ভালো সুফল পাওয়া যায়নি। দেশটির পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী চুয়াং হুন কম জন্মহারের জন্য নারীদের অতিরিক্ত কাজ করাকে দায়ী করেছিলেন।

বিলে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সাল থেকে গর্ভবস্থায় থাকা প্রতিটি শিশুকে প্রসবের আগের যাবতীয় খরচ হিসেবে ২০ লাখ কোরিয়ান নগদ অর্থ (উন) (বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৫৬ হাজার টাকা) বোনাস দেয়া হবে। শিশুর জন্মের পর এক মাস হওয়ার আগ পর্যন্ত তিন লাখ উন মাসে দেয়া হবে। দম্পতিদের উৎসাহিত করতে ২০২৫ সাল থেকে প্রতি মাসে ওই অর্থের পরিমাণ বেড়ে হবে পাঁচ লাখ উন।

সূত্র: বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *