ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বরখাস্ত কাউন্সিলর ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে র্যাবের করা দুই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। দুই মামলায় ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি এবং তার দেহরক্ষীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন ইরফান সেলিমকে অব্যাহতির সুপারিশ করে দেহরক্ষী জাহিদের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাইনি বলে আমরা প্রতিবেদন জমা দিচ্ছি।’
গত বছরের ২৫ অক্টোবর রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকায় নৌ-বাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খান মোটরসাইকেলযোগে যাচ্ছিলেন। এ সময় ইরফান সেলিমের গাড়িটি তাকে ধাক্কা মারে।
তিনি পরিচয় দিলেও আসামি গাড়ি থেকে নেমে তাকে কিল-ঘুষি মারেন এবং মেরে ফেলার হুমকি দেন। তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এই ঘটনার একটী ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
পরে এ ঘটনায় ওয়াসিফ আহমদ খান বাদি হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে র্যাবের ডিএডি মো. কাইয়ূম উল্লেখ করেছিলেন, চকবাজারের দেবীদাস ঘাট লেনের ২৬ নম্বরে রয়েছে ‘চান সর্দার দাদাবাড়ি’ ভবন। এই ভবনে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ কয়েকজন ব্যক্তি অবস্থান করছেন— এই খবরের সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর র্যাবের ৮ থেকে ১০ জন সদস্য ঘটনাস্থলে যান। সেখানে অভিযান চালিয়ে র্যাব অস্ত্র–মাদকসহ এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান মো. সেলিম ও জাহিদুল মোল্লাকে আটক করে।
অভিযানকালে ইরফান সেলিমকে মাদক রাখার দায়ে এক বছর ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ছয় মাস এবং ইরফানের দেহরক্ষী জাহিদুলকে ওয়াকিটকি বহনের দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরে ইরফান ও জাহিদের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আলাদাভাবে চারটি মামলা দায়ের করে র্যাব। চার মামলাই তদন্ত করেন চকবাজার থানার পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন।
নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ ও অসদাচরণের অভিযোগে ইরফানকে ইতোমধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দেহরক্ষী জাহিদুলসহ দুজনই এখন কারাগারে আছেন।