ডেস্ক রিপোর্ট: জন্মহার হ্রাসের রেকর্ড করলো দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ৩ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘দ্য কোরিয়া টাইমস’ এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। প্রাকৃতিক হ্রাসের জন্য রেকর্ড কম সংখ্যক জন্মহার মৃত্যুহারের চেয়েও কমে গিয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র ও সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সর্বশেষ আদমশুমারির পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত জনসংখ্যা ছিল ৫ কোটি ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ২৩ জন। যা ২০১৯ সালের থেকে ২০ হাজার ৮৩৮ জন কম। আগের দশ বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। যদিও বৃদ্ধির হার ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পেয়েছিল। ২০১০ সালের ১.৪৯ শতাংশ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মাত্র ০.০৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা যায়, ২০২০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় ২ লাখ ৭৫ হাজার ৮১৫ জন জন্মগ্রহণ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০.৬৫ শতাংশ কম। তবে ২০২০ সালে ৩ লাখ ৭ হাজার ৭৬৪ জন মারা গিয়েছিল, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৩.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে, ২০১৪ সালে সরকারি এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী বিবাহিত নারীদের মধ্যে সাড়ে ২২ শতাংশ নারী বিয়ে, সন্তানের জন্ম ও সন্তানের দেখভালের জন্য চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন।
তবে সঙ্গী তৈরি ও সন্তান ধারণে নারীর এই অনীহা বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করতে যাচ্ছে দেশটিতে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা দিনের বেশির ভাগ সময় অফিসেই কাটান। কিন্তু সরকার চাচ্ছে দেশে জন্মহার বাড়ুক। তাই দেশটি অফিস সময় কমানোর একটি বিল পার্লামেন্টে পাস করেছে এবং তা কার্যকর করেছে।
বিলে বলা হয়েছে ৬৮ ঘণ্টার জায়গায় এখন সপ্তাহে ৫২ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। ফলে দিনে গড়ে দুই ঘণ্টা অফিসে কম সময় দিতে হবে। দেশটির নেতারা বলছেন, কর্মঘণ্টা কমানোর ফলে পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটাবেন নারী ও পুরুষরা। স্বাস্থ্যের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া, অবসাদ কাটানো ও জন্মহার বাড়ানোর জন্য নতুন এ নিয়ম জারি করেছিল দেশটি। কিন্তু তাতেও কোনো ভালো সুফল পাওয়া যায়নি। দেশটির পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী চুয়াং হুন কম জন্মহারের জন্য নারীদের অতিরিক্ত কাজ করাকে দায়ী করেছিলেন।