ঝাঁকে ঝাঁকে মরু পঙ্গপালের কারণে পূর্ব আফ্রিকা ও আরব বিশ্বের কয়েকটি দেশের লাখ লাখ মানুষের জীবিকা আবারও বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে। এরইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক বার্তা উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ।
বছরখানেক আগেও এসব দেশে পঙ্গপালের হানার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। এরপর প্রচুর কীটনাশক ছিটিয়ে এসব পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হলেও কোনো লাভ হয়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ বলছে, মরুভূমির এসব পঙ্গপালের বংশ বিস্তারের জন্য ইথিওপিয়ার পূর্বাঞ্চলে এবং সোমালিয়াতে এখনো আদর্শ পরিবেশ বজায় রয়েছে। এর ফলে ঝুঁকির মুখে রয়েছে কেনিয়াও। এছাড়া লোহিত সাগরের উভয় পাশে প্রচুর পঙ্গপালের জন্ম হচ্ছে। যার ফলে ইরিত্রিয়া, সৌদি আরব এবং ইয়েমেনও নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হচ্ছে, পূর্ব আফ্রিকাতে এ বছর পঙ্গপালের যে ধরনের আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, গত ৭০ বছরের ইতিহাসে সে রকম কখনো চোখে পড়েনি। এখন যে ভীতি তৈরি হয়েছে, আমরা আবারো একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারি কিংবা এর পরিণতি আগের বারের চেয়েও খারাপ হতে পারে। তবে এই অঞ্চলের দেশগুলো পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখন আগেরবারের তুলনায় ভালোভাবেই প্রস্তুত রয়েছে।
পঙ্গপালের আক্রমণের পূর্বাভাস নিয়ে কাজ করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কিথ ক্রেসমান। তিনি জানান, কেনিয়াতে এই হুমকি আসন্ন, এখন থেকে যে কোনো সময়ে তারা হানা দিতে পারে।
ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা আরও বলেন, এবারকার পরিস্থিতি গতবারের মতোই খারাপ হতে পারে। কারণ বিভিন্ন দেশের সাড়ে তিন লাখ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এলাকায় এসব পঙ্গপালের বংশবৃদ্ধি ঘটছে।এ বছরের জানুয়ারি থেকে অগাস্ট পর্যন্ত কোটি কোটি পঙ্গপাল পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোতে আক্রমণ করে ব্যাপক ফসলহানি ঘটিয়েছে।
কেনিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় একজন পশু খামারি গঞ্জোবা গুইয়ো জানান, পঙ্গপালের প্রকোপের কারণে আমি ১৪টি ছাগল, চারটি গর্নু এবং দুটো উট হারিয়েছি। এর আক্রমণে আমরা অনেক পশুচারণ ভূমি ও গাছপালা হারিয়েছি। আর এ কারণে এখনো আমাদের প্রচুর গবাদিপশু মারা যাচ্ছে।