মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দুর্বার গতি পেয়েছে উন্নয়ন, মানুষের আয়-আয়ু বেড়েছে, প্রান্তিক অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে, তবে আইনের শাসন পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি, বৈষম্য কমছে না বলে মনে করেন সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, আবুল কাসেম ফজলুল হক, জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও আতিউর রহমান।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের মতে, বাংলাদেশ এগিয়েছে, এগিয়ে যাবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে আপোস করে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ হবে না। আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে বাংলাদেশের প্রতি।
২০২০ সালে বিজয় দিবসের বিশেষমাত্রা আছে। কারণ এই বিজয় দিবসের প্রাক্কালে ১০ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর পুরো অবকাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। এটি বাঙালির আরেকটি বিজয়। দেশের প্রবৃদ্ধি হলেও ধনবৈষম্য বাড়ছে, কিছু মানুষের হাতে প্রচুর বিত্ত আর কিছু মানুষ বিত্তহীন। এই বাংলাদেশ আমরা চাইনি।
উন্নয়ন-অগ্রগতির বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখলেও গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কতোটা সফল তা নিয়ে প্রশ্ন আছে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাধারণভাবে আইনের শাসন আছে। এর ফলেই আমরা টিকে আছি। অন্যথায় আমরা টিকে থাকতে পারতাম না। তবে কতোগুলো জায়গায় আইনের শাসন নেই। যারা প্রবল রাজনৈতিক শক্তি তারা অন্যদের এমন ভাষায় কথা বলেন, মনে হয় তাদের মানুষ বলেই গণ্য করেন না! যে ভাষায় কথা বলা হয়, এর মধ্যে গণতান্ত্রিক মানসিকতার কিছুই নেই। রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের বাস্তব অবস্থা খুব খারাপ। মৌলবাদবিরোধী আন্দোলনের চেয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন গড়ে তোলা অনেক বেশি দরকার। আমাদের তাকাতে হবে আমজনতার দিকে। তাদের জাগিয়ে তোলার জন্য কাজ করতে হবে।
জনাব আবুল কাসেম ফজলুল হকের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যংকের সাবেক গর্ভনর ড. আতিউর রহমান। তার মতে, বাংলাদেশ অনেকদিক থেকেই সফল। দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে। সামাজিক উন্নয়ন ঘটেছে। মানুষের আয়-আয়ু বেড়েছে। যা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা চেষ্টা করে যাচ্ছেন সব বিরূপ পরিবেশ-প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে। বঙ্গবন্ধুকন্যা যেন একটা স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে পারেন, তার পাশে থাকতে হবে আমাদের।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন উৎসাহজনক তা মানেন, কিন্তু এখানে এখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি বলে মনে করেন মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, মানুষ যদি তার আশা-আকাক্সক্ষার কথা বলতে না পারে, পেটভরে খেতে না পারে, তাহলে দেশের কতো প্রবৃদ্ধি হলো সেটা বেশি বড় কথা নয়। এখনো দেশে দারিদ্র্য আছে। অনাহার না থাকলেও পুষ্টিহীনতা আছে। সব অর্জনই ম্লান দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি বলে। গণতন্ত্র এখন কবরে! এই দায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের। জনগণেরও ব্যর্থতা আছে, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারিনি আমরা।