জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় জলবায়ু তহবিলের পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিপর্যয় প্রশমন ব্যবস্থা নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১২ ডিসেম্বর) প্যারিস চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল সামিটে তিনি এ আহ্বান জানান।
পূর্বে ধারণকৃত ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী পালন করছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা চুক্তিতে নির্ধারিত লক্ষ্যগুলোর ধারে কাছেও নেই। বাস্তবতা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রতিকূলতা আমাদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য থেমেও থাকছে না, বিপর্যয় থেকে আমাদের রেহাইও দিচ্ছে না।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও অভিযোজন ব্যবস্থায় বাংলাদেশ বিশ্বে নেতৃস্থানীয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই প্রসঙ্গে সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই অভিযোজন করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক দেশকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতের মধ্যে বর্ধিত এনডিসি ঘোষণা দেওয়ার আহ্বানের মাধ্যমেই তারা জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরামের ‘মিডনাইট সারভাইবাল ডেডলাইন ফর দ্য ক্লাইমেট’ উদ্যোগটি চালু করেছেন।
বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে দেশব্যাপী ১১.৫ মিলিয়ন গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে এবং সুরক্ষিত টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সম্পদ জড়ো করতে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ নামে একটি কর্মসূচিও চালু করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এনডিসি এবং অভিযোজন লক্ষ্যমাত্রা টেকসইভাবে বাড়াতে প্রশমন প্রক্রিয়ায় আমরা বিদ্যমান জ্বালানি, শিল্প এবং পরিবহন খাত ছাড়াও আরও কিছু সম্ভাব্য সেক্টর যুক্ত করবো। আমরা আমাদের জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করছি। প্রতি বছর আমরা জলবায়ু পরিবর্তন সংবেদনশীল প্রকল্পের জন্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং অভিযোজন ব্যবস্থার জন্য ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করছি।
যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ ও ফ্রান্স যৌথভাবে চিলি ও ইতালির অংশীদার সহযোগিতায় এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁন, চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাসতিয়ান পিনেরাঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিউসিপে কোঁত উদ্বোধনী ভাষণের মাধ্যমে সম্মেলনটি শুরু হয়। এছাড়া চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদ সুগা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ইটালির মন্ত্রী পরিষদের প্রেসিডেন্ট সেলিনা নেইরোক লীম, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা, বারবাডোসের প্রধানমন্ত্রী হোন মিয়া মোটলি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লেয়েন অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।