হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনে কাঠের তৈরি ক্র্যাচ দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে ভিক্ষা করেন রেনু বেগম। বয়স ৯০ ছুঁই ছুঁই। নেই ঘরবাড়ি, নেই তেমন শীতবস্ত্র। আছে শুধু ভিক্ষার ঝুলি।
বয়সের ভারে চলতে না পারলেও চলতে হয় তার। উপায় নেই। কারণ ভিক্ষা করতে পারলেই পেট চলবে তার। যেদিন ভিক্ষা করতে না পারেন সেদিন দু’মুঠো ভাত খেতে পারেন না, থাকতে হয় উপোস।
স্বাধীনতার পর স্বামী মারা যান। এক সন্তান নিয়ে বহু কষ্টে দিন পার করছিলাম। ছেলে বড় হয়ে বিয়ে করে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার জয়পাশায় থাকে। সেও অসুস্থ। আমাকে দেখার সামর্থ্য নেই বলে জানান এ বৃদ্ধা।
তিনি জানান, কোনো উপায় না থাকায় এই বয়সে আমি ভিক্ষা করছি। ভিক্ষা করলে দিনে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পাই। এই দিয়ে চলে। রাতে জংশনের প্লাটফর্মেই থাকি। ভিক্ষা করতে না পারলে খাবারও জোটে না।
স্থায়ী বসতি না থাকায় তিনি বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতা পান না বলে জানান এ বৃদ্ধা।
টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। সরকারের কাছে বাসস্থান ও আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
জংশনের লেবার সরদার হুমায়ূন মিয়া বলেন, ‘এ শীতে রেনু বেগম ভিক্ষা করে খান। রাতে স্টেশনেই থাকেন। কেউ যদি তার পাশে দাঁড়াতো, তাহলে এই বয়সে আর তাকে ভিক্ষা করতে হতো না।’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন উপজেলা শাখার সভাপতি মো. আব্দুর রকিব বলেন, ‘এ অসহায় নারীকে বৃদ্ধা বয়সে ভিক্ষা করে খেতে হচ্ছে। সত্যি দুঃখজনক। তার জন্য কষ্ট হচ্ছে।’
বিত্তবানদের তার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান মো. আব্দুর রকিব।