ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় ডিএসসিসির উচ্ছেদ অভিযানে হামলা হামলা, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশও কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বেলা ১১টার দিকে ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এ নকশা বহির্ভূত ৯১১টি দোকান উচ্ছেদ করতে আসে সিটি করপোরেশন। তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযানে অংশ নেন। কিন্তু দোকানিরা রাস্তায় অবস্থান নেওয়ায় অভিযান নির্ধারিত সময় শুরু করা যায়নি।
বেলা পৌনে একটার দিকে এক্সকাভেটর দিয়ে মার্কেটের নগর প্লাজার সামনের ফুটপাতে থাকা একটি দোকান ভাঙা শুরু করা হয়। এতে উত্তেজিত হয়ে পড়েন দোকানিরা। তাঁরা চারপাশ থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। শুরুতে পুলিশ পিছু হটে। পরে কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল পুলিশ। এমন অবস্থায় ওই সড়ক দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
দোকানিদের বিক্ষোভ ও বাধা সত্ত্বেও উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ।
ডিএসসিসির তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর এই বিপণিবিতানে ৯১১টি নকশাবহির্ভূত দোকান আছে। যার মধ্যে কিছু দোকান বিপণিবিতানের শৌচাগার, লিফটের জায়গা ও মানুষের হাঁটার পথে তৈরি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় এই দোকানগুলো উচ্ছেদে অভিযান শুরুর কথা ছিল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় বা নগর ভবনের ঠিক উল্টোপাশে এই বিপণিবিতানটির অবস্থান। এতে তিনটি ভবন রয়েছে। এগুলো এ, বি ও সি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। তবে দোকানিরা এ ব্লকের নাম দিয়েছেন সিটি প্লাজা, বি ব্লকের নগর প্লাজা এবং সি ব্লকের নাম দিয়েছে জাকের সুপার মার্কেট।
দোকানিদের দাবি, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের সময় নকশাবহির্ভূত এসব দোকান বৈধ করতে তাঁরা লাখ লাখ টাকা দিয়েছেন। দোকানগুলো থেকে ডিএসসিসি এত দিন ভাড়াও নিয়েছে। এখন কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই দোকান উচ্ছেদ করার জন্য এসেছেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
তবে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বলেন, উচ্ছেদ অভিযানের আগে দোকানমালিকদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ডিএসসিসির রাজস্ব বিভাগ জানায়, বিপণিবিতানটির নকশা অনুয়ায়ী এ ব্লকে ১৭৬টি দোকান, বি ব্লকে ১৭৬টি, সি ব্লকে ১৭৯ টিসহ মোট ৫৩১টি দোকান থাকার কথা। কিন্তু নকশাবহির্ভূতভাবে এ ব্লকে ৩০৮টি, বি ব্লকে ২৯২টি এবং সি ব্লকে ৩১১টি দোকান করা হয়েছে।
ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, নতুন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস দায়িত্ব নেওয়ার পর এই বিপণিবিতানের নকশাবহির্ভূত দোকান এবং এর সার্বিক পরিস্থিতি জানতে একটি কমিটি গঠন করে দেন। করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের এই কমিটি বিপণিবিতানে নকশাবহির্ভূত ৯১১টি দোকান চিহ্নিত করে এবং সেগুলো উচ্ছেদের সুপারিশ করে। কমিটির সুপারিশে মেয়র সম্মতি দিয়ে নকশাবহির্ভূত দোকান উচ্ছেদের নির্দেশনা দেন। এরপর আজ বেলা ১১টা থেকে পর্যায়ক্রমে নকশাবহির্ভূত সব দোকান উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ডিএসসিসি।